কোনো রাষ্ট্রের নামার আগে ইসলামী বসানোর কি প্রয়োজন আছে?
একটি রাষ্ট্রকে একটি বিল্ডিং, বাসা বা ঘরের সাথে তুলনা করুন। মনে করুন, বাসার একটি ফ্ল্যাটে ৬ জন মুসলমান, অন্য ফ্ল্যাটে ২ জন হিন্দু, এবং আরেকটি ফ্ল্যাটে ১ জন বৌদ্ধ ও ১ জন খ্রিস্টান বাস করেন। অর্থাৎ, একটি বাসায় ৪টি ধর্মের ১০জন মানুষ বাস করেন। তাহলে এ বাসার নামের আগে কি ‘ইসলামী বাসা’ বসানোটা উচিত হবে?
একটি বাসার মানুষ মুসলিম হতে পারেন, কিন্তু বাসার নামের আগে ‘ইসলামী’ শব্দটা ব্যবহার করার কি কোনো প্রয়োজন আছে?
একই বাসায় বসবাসকারী অন্য ধর্মের লোককে ইসলামের প্রতি দাওয়াত দেয়া যায়, কিন্তু, বাসার নামের আগে ‘ইসলামী বাসা’ বললেই কি অমুসলিমকে দাওয়াত দেয়া হয়ে যাবে? এর কি কোনো যুক্তি আছে?
একটি বিল্ডিং বা বাসা কি মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারে, রোজা রাখে? কোনো বাসাকে ‘ইসলামী বাসা’ বলার মানে কি? যদি কোনো বাসাকে ‘ইসলামী বাসা’ বলার প্রয়োজন না হয়, তাহলে একটি রাষ্ট্রকেও ইসলামি রাষ্ট্র বলার প্রয়োজন নেই।
কোনো বাসায় কেবল মুসলিমরা বসবাস করলে আমরা সে বাসাকে ‘ইসলামী বাসা’ বলার জন্যে কি আন্দোলন করি? অথবা, কোনো শহর বা গ্রামের প্রতিটি বাসার নামের আগে ‘ইসলামী’ শব্দটি বসানোর জন্যে কি আমরা আন্দোলন করি? যদি না করি, তাহলে একটি রাষ্ট্রের নামের আগে ‘ইসলামী’ শব্দটা বসানোর প্রয়োজন কি?
কোনো রাষ্ট্রের শাসক মুসলিম হলে, রাষ্ট্র এমনিতেই ইসলামী হয়ে যাবে, এবং শাসক খারাপ হলে রাষ্ট্র এমনিতেই খারাপ হয়ে যাবে। কোনো রাষ্ট্র নামে ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ হলেও শাসক যদি খারাপ হয়, তাহলে লাভ কি? অথবা, কোনো রাষ্ট্র নামে ‘ইসলামী’ না হলেও, যদি শাসক ভালো হয়, তাহলে ক্ষতি কি?
একজন মানুষের নাম আবদুর রহিম হলেই যেমন সে ভালো মানুষ হয়ে যায় না। তেমনি একটি সংবিধান বা রাষ্ট্রের নাম ইসলামী হলেই তা ভালো বা কল্যাণ রাষ্ট্র হয়ে যায় না।