‘হারফ ইনকিলাব’ তুরস্কের একটি বহুল বিতর্ক

তুরস্কের বহুল একটি বিতর্কের নাম – হারফ ইনকিলাব বা অক্ষর পরিবর্তন। আগে তার্কি ভাষা লিখা হতো আরবি অক্ষরে। কামাল আতাতুর্ক ক্ষমতায় আসার পর আরবি অক্ষরের পরিবর্তে ল্যাটিন অক্ষরে তার্কি ভাষা লিখা চালু করেছেন। এ কারণেই বিতর্কটা শুরু হয়।

তুরস্কের ইসলামপন্থীদের মধ্যে একদল বলছে, খলিফা আব্দুল হামিদ খান নিজেই ‘হারফ ইনকিলাব’ করতে চেয়েছিলেন। হারফ ইনকিলাবের কারণে তুরস্কে অনেক অগ্রগতি হয়েছে এবং নিজস্ব জাতীয়তা রক্ষা করা গিয়েছে। যেমন, অধিকাংশ টেকনোলজিতে আরবি হরফের কারণে আরবি ভাষা ব্যবহার করা যায় না, ফলে বাধ্য হয়ে আরব বিশ্বকে ল্যাটিন হরফ ও ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করতে হয়। এতে আরব বিশ্ব ভাষাগতভাবে ইংরেজির উপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু তুরস্কে সব ধরণের টেকনোলোজিতে তার্কি ভাষা ব্যবহার করা যায় হরফ ইনকিলাবের কারণে। হরফ ইনকিলাব না হলে আরব বিশ্বের মতো, তুরস্ককেও টেকনোলজির কাজে ইংরেজি ভাষার উপর নির্ভর করতে হতো। এতে ইউরোপ খুব সহজেই তুরস্কের উপর আধিপত্য করতে পারতো।

অন্য কিছু ইসলামপন্থী বলছে, খলিফা আবদুল হামিদ ‘হারফ ইনকিলাব’ চেয়েছেন বলে যে বর্ণনাগুলো আছে, তা সঠিক নয়। তুরস্কের তরুণরা যাতে তাদের দাদাদের লেখা না পড়তে পারে, তাই হরফ ইনকিলাব হয়েছে। এর ফলে তরুণরা ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, এবং সহজেই ইউরোপ-আমেরিকার আধিপত্য মেনে নিচ্ছে।

দুই পক্ষের-ই যথেষ্ট যুক্তি আছে। আসলে তুরস্কের হরফ ইনকিলাবকে ইসলাম-বিরোধী প্রচারণা করা ঠিক নয়।

15 March at 4:08 pm 2020

আরো পোস্ট