মুসলিম সাম্রাজ্য বা খ্রিস্টান সাম্রাজ্য হারিয়ে ফেলার ব্যর্থতা কোনোভাবেই আলেম ও বুদ্ধিজীবীদের উপর চাপিয়ে দেয়া যায় না
“হালাকু খান খাওয়ারিজম সাম্রাজ্য ধ্বংস করে যখন বাগদাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল তখন বাগদাদের ওলামারা বিতর্ক করছিলো,জোরে জিকির হালাল না হারাম!!!” – শেখ নজরুল
এ ধরণের একটা গল্প খ্রিস্টানদের কাছেও শুনা যায়। সুলতান ফাতিহ মোহাম্মদ যখন ইস্তানবুল জয় করছিলেন, তখন ইস্তানবুলের খ্রিস্টান আলেমগণ তর্ক করছিলেন, “ফেরেশতারা পুরুষ না নারী”
উপরের দুটি গল্পই আমার কাছে সমস্যাজনক মনে হয়।
প্রতিটি দেশের বুদ্ধিজীবী ও সেনাবাহিনীর কাজ আলাদা আলাদা। যেকোনো দেশ বা সাম্রাজ্য রক্ষা করা সেনাবাহিনীদের কাজ, এটা আলেম বা বুদ্ধিজীবীদের কাজ নয়। বুদ্ধিজীবী ও আলেমদের কাজ একাডেমিক বিতর্ক চালিয়ে যাওয়া, মাঠে গিয়ে যুদ্ধ করা নয়।
ধরুন, বাংলাদেশের সীমানায় ভারত আঘাত করে দুই একর জমি নিয়ে গেলো। এটা কি বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের ব্যর্থতা? নাকি সেনাবাহিনী ও বিজিবি এর ব্যর্থতা?
আলেম ও বুদ্ধিজীবীদের কোনো দেশ ও সীমানা নেই। বাংলাদেশের একজন আলেম বা বুদ্ধিজীবী কেবল বাংলাদেশ নিয়েই চিন্তা করতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবির দায়িত্ব বাংলাদেশের সীমানা রক্ষা করা।
আলেম ও বুদ্ধিজীবীরা সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম বিষয় নিয়ে বিতর্ক করবে, এটাই স্বাভাবিক। বর্তমান ইউরোপ ও আমেরিকার বুদ্ধিজীবীরাও সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম বিষয় নিয়েই গবেষণা করে। এটাই বুদ্ধিজীবীদের কাজ। কিন্তু সুক্ষ্ম বিষয় নিয়ে গবেষণা করার সাথে সাম্রাজ্য হারানোর কোনো যোগসূত্র নেই।
অর্থাৎ, মুসলিম সাম্রাজ্য বা খ্রিস্টান সাম্রাজ্য হারিয়ে ফেলার ব্যর্থতা কোনোভাবেই আলেম ও বুদ্ধিজীবীদের উপর চাপিয়ে দেয়া যায় না।
22 August 2019 at 16:56pm