নারী দিবসের লেখা – ১২

নারীরা যদি মসজিদে যায়, তখন কোনো পুরুষ যদি কোনো নারীর সাথে অসঙ্গত আচরণ করে ফেলে, তাহলে কি হবে?

রাসূল (স)-এর সাহারীদের সমাজটি ছিলেন মানব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ একটি সমাজ। যদিও রাসূল (স) ব্যতীত অন্যরা ভুলভ্রান্তির ঊর্ধ্বে ছিলেন না। এমনকি, সাহাবীদের সবাই একই স্তরের ছিলেন না। কেউ কেউ ইসলামের জন্যে নিজেদের জীবন পর্যন্ত ত্যাগ করতে রাজি ছিলেন। আবার কেউ কেউ নিজেদের খারাপ দৃষ্টি পর্যন্ত ত্যাগ করতে রাজি ছিলেন না, এমনকি মসজিদের ভিতরেও না।

এই হাদিসটি অনেকগুলো সহীহ হাদিস গ্রন্থে এসেছে। ইবনে আব্বাস (রা) বর্ণনা করেন –

“মসজিদে নববীর ভিতর নারীদের কাতারে একজন রূপসী নারী নামাজ পড়তেন। ঐ নারীটি ছিলো সবার চেয়ে বেশি সুন্দরী। কিছু পুরুষ সাহাবী মসজিদের একেবারে প্রথম কাতারে চলে যেতেন, যাতে ঐ সুন্দরী নারীটিকে না দেখা যায়। আবার কিছু কিছু পুরুষ খুব আস্তে ধীরে হেঁটে আসতেন, যাতে একেবারে শেষের কাতারে থাকা যায়। সবাই যখন রুকুতে যেতো, তখন শেষ কাতারের কেউ কেউ পিছনের দিকে তাকিয়ে থাকতো, যাতে ঐ নারীকে দেখতে পারে। এ কাজটি তাঁরা ততদিন পর্যন্ত করেছিলেন, যতদিন পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাজিল করেননি। “নিশ্চয় আমি জেনে রেখেছি, তোমাদের মধ্যে কারা অগ্রগামী। এবং নিশ্চয় আমি জেনে রেখেছি, তোমাদের মধ্যে কারা পশ্চাদগামী।”(১৫:২৪)
[সহীহ বুখারী, সালাত অধ্যায়, ২/১৯৫। সহীহ মুসলিম, মসজিদ অধ্যায়, ২/১১৮]

এখানে লক্ষ্য করুন। যখন মসজিদের ভিতরে কিছু পুরুষ একটি অশালীন কাজ করলেন, তখন সেই পুরুষদেরকেই নিন্দা করা হয়েছে, এবং কেবল তাঁদেরকেই উপদেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঐ সুন্দরী নারীটিকে কোনো ধরণের নিন্দা করা হয়েছে এমন একটি হাদিসও নেই। এ ক্ষেত্রে নারীদেরকে স্বাভাবিকভাবেই ছেড়ে দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু, একই ঘটনা যদি বর্তমানে ঘটে, তাহলে ঠিক উল্টো আচরণ করা হবে। ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার নামে নারীদেরকে হয়তো মসজিদের পাশে একটি রুমে পাঠিয়ে দেয়া হবে, অথবা মসজিদ থেকেই তাদেরকে বের করে দেয়া হবে।

এখানে বিষয়টি একেবারেই স্পষ্ট। রাসূল (স)-এর সময়ে এমন একটি সমস্যা হয়েছিলো। সমস্যাটি ঘটার পূর্বে মসজিদের ভিতরে নারী ও পুরুষের জন্যে যে নিয়ম রাসূল (স) ঠিক করে দিয়েছিলেন, সমস্যাটি ঘটার পরেও একই নিয়ম বহাল ছিলো। মসজিদের ডিজাইনে কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ রাসূল (স) করেননি।

[শায়েখ জাসের আওদার বই “Reclaiming The Mosque” থেকে অনূদিত]

29 ডিসেম্বর, 2017, 12:49 PM

আরো পোস্ট