নেতাকে সর্বদা জনগণের ভাষায় কথা বলা প্রয়োজন

এরদোয়ান যত দেশেই যাক, বা যত বড় বিদেশী ব্যক্তির সাথেই কথা বলুক, তার্কি ভাষায় কথা বলে। ফলে জনগণ বুঝে তাদের নেতা বিদেশীদের কাছে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছেন কিনা।

যদি আমি একজন সাধারণ মানুষ হই বা ব্যবসায়ী হই, তাহলে আরব দেশের লোকজনের সাথে আরবিতে কথা বলবো, পাকিস্তান বা ভারতের লোকজনের সাথে উর্দুতে কথা বলবো, তুরস্কের লোকের সাথে তার্কিতে কথা বলবো, আর অন্য দেশের মানুষের সাথে ইংরেজিতে কথা বলবো। এটা কোনও সমস্যা-ই না।

কিন্তু আমি যদি গণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করি, আমি যদি একজন নেতা হই, তাহলে অবশ্যই আমি বাংলা ভাষায় কথা বলবো। কারণ, আমি মানে আমার জনগণ। আমি আমার জনগণের পক্ষ থেকে কথা বলছি। আমি দেশের পক্ষে না বিপক্ষে কথা বলছি, তা আমার জনগণকে বুঝতে হবে।

একজন নেতা চাইলেই একজন দোভাষী নিয়োগ করতে পারেন। কিন্তু কোটি কোটি জনগণ কি তাঁদের নেতার কথা বুঝার জন্যে কোটি কোটি দোভাষী নিয়োগ করবে? সম্ভব না।

আসলে একজন নেতা বিদেশীদের সাথে কোন ভাষায় কথা বলছেন, এর উপর ভিত্তি করে বুঝা যাবে, তিনি আসলে কার স্বার্থের জন্যে কাজ করছেন।

যদি কোনও নেতা বিদেশীদের সাথে বাংলায় কথা বলেন, এবং একজন দোভাষী নিয়োগ করেন, তাহলে বুঝা যাবে, তিনি বিদেশিদেরকে একটু ঝামেলায় ফেললেও দেশের কোটি কোটি মানুষের উপকার করলেন। নেতার ভাষা বুঝার জন্যে দেশের মানুষের কোনও কষ্ট করতে হবে না।

কিন্তু কোনও নেতা বিদেশীদের একটু ঝামেলা হবে বলে তাঁদের সাথে বিদেশী ভাষায় কথা বলার অর্থ হলো তিনি দেশের কোটি কোটি মানুষকে বিপদে ফেললেন। বিদেশি ভাষা বুঝার জন্যে দেশের কোটি কোটি মানুষকে বাধ্য করলেন। এটা একজন নেতার কাজ হতে পারে না।

আমরা নেতা বানাই দেশের মানুষের ভালোর জন্যে। বিদেশীদের ভালোর জন্যে না।

দেশের নেতারা বিদেশীদের সাথে বাংলা ভাষায় সাহস নিয়ে কথা বলুন। হীনমন্যতাকে জয় করুন। মনে রাখুন, আমরা বিজয়ী জাতি।

আমাদের অনেক ভাষা জানা উচিত। কিন্তু সেটা অন্যের জন্যে নয়, নিজের জ্ঞান অর্জনের জন্যে।

আমরা যে জনগোষ্ঠীর কাছে ইসলামের বা জ্ঞানের বাণী পোছাতে চাই, সে জনগোষ্ঠীর ভাষাতেই আমাদের কথা বলা উচিত। এটাই কোর’আন ও হাদিসের নীতি। আল্লাহ তায়ালা বলেন –

وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ فَيُضِلُّ اللَّهُ مَن يَشَاءُ وَيَهْدِي مَن يَشَاءُ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ

“আমি সকল রাসূলকে একমাত্র তার জনগোষ্ঠীর ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে।” [সূরা ১৪/ইব্রাহীম, আয়াত ৪]

যারা নিজেদেরকে নবী-রাসূলের ওয়ারিশ মনে করেন, তারা কিন্তু কোর’আনের এ আয়াতটি অনুসরণ করেন না।

আরো পোস্ট

একটি মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস প্রকাশ করা হবে না। তারকা (*) চিহ্নিত ঘরগুলো পূরণ করা আবশ্যক