“জনগণ-ই সকল ক্ষমতার উৎস” – এটা কি কুফরি বা শিরকি কথা?
ইসলামী রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয় কোর’আনের যে আয়াত, তা হলো –
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ
“আইন বা বিধান দেয়ার অধিকার কেবল আল্লাহরই” [সূরা ১২/ইউসুফ – ৪০]
আধুনিক গণতন্ত্রের বিপরীতে অনেকেই এই আয়াতটি ব্যবহার করেন। আধুনিক গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র – “জনগণ-ই সকল ক্ষমতার উৎস।” এই কথার বিপরীতে কোর’আনের উপরোক্ত আয়াতকে ব্যবহার করে অনেকে বলেন – “যার আল্লাহর আইন ছাড়া অন্য কোনো মানুষের আইন মেনে নেয়, এবং গণতন্ত্রকে গ্রহণ করে, তারা কাফের।”
আসলে এই আয়তটি খারিজিদের যুগ থেকেই ভুলভাবে ব্যাখ্যা হয়ে আসছে। তারাই সর্বপ্রথম এ আয়াতটিকে রাজনৈতিক শ্লোগান হিসাবে ব্যবহার করে। খারিজিরা আলী (রা)-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও যুদ্ধ করার সময়ে এই বলে শ্লোগান দিতো যে – “আল্লাহ ছাড়া কারো আইন দেয়ার অধিকার নাই, চলো চলো সবাই জান্নাতে যাই।”(১) তাদের এই শ্লোগানে মসজিদ প্রকম্পিত হতে থাকতো।
সিফফিনের যুদ্ধে হাজার হাজার মুসলমান শহীদ হবার পরে আলী (রা) মুয়াবিয়া (রা)-এর সাথে একটি সমঝোতা চুক্তি করতে চাইলেন। আলী (রা)-এর পক্ষ থেকে আবু মুসা আশ’আরী (রা) এবং মুয়াবিয়া (রা)-এর পক্ষ থেকে আমর বিন আস (রা)-কে বিচারক হিসাবে নিয়োগ করা হলো। উভয় বিচারক যে সিদ্ধান্ত নিবেন, তা আলী ও মুয়াবিয়া (রা) সহ সকল মুসলমান মেনে নিবেন। কিন্তু এখানে বিপত্তি বাঁধালো খারিজিগণ। তারা বলতে শুরু করলো, “আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো মানুষকে আমরা আইনদাতা হিসাবে মানি না।” কোর’আনের একটি আয়াতকে (সূরা মায়েদা – ৪৪) রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করে খারিজিগণ আলী (রা)-কে এবং তাঁর অনুসারীদেরকে কাফির ঘোষণা করলো, এবং তারা আলী (রা)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে ফরজ মনে করলো। আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইফা, ৭ম খণ্ড, ৫১৬
এখানে খারেজিদের যুক্তি হলো, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মানুষের আইন প্রণয়ন করার অধিকার নেই। অন্যদিকে আলী (রা)-এর যুক্তি হলো, আল্লাহ নিজেই কোর’আনে আইন প্রণয়ন করার অধিকার মানুষকে দিয়েছেন। যেমন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি বিরোধ সৃষ্টি হয়, তাহলে দুই পক্ষ থেকে দুইজন বিচারক নিয়োগ করার কথা আল্লাহ নিজেই বলেছেন।সূত্র – সূরা নিসা – ৩৫ সুতরাং, যে কেউ আইন প্রণয়ন করতে পারে, এতে কোনো সমস্যা নেই।
খারিজিরা আলী (রা)-এর উপরোক্ত যুক্তিটি মানলো না। তারা আলী (রা)-কে বলতে লাগলো, “আপনি আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে বিচারক নিয়োগ করেছেন, অথচ আল্লাহ ছাড়া কারো বিচার করার অধিকার নেই।”(৪)
খারিজিদের এ কথা শুনে আলী (রা) কোর’আনে হাফিজদেরকে তাঁর দরবারে ডেকে আনেন, যেহেতু খারিজিরা সবাই কোর’আনে হাফিজ ছিলো। কোর’আনে হাফিজগণ যখন আলী (রা)-এর দরবারে আসলেন, তখন আলী (রা) কোর’আনের একটি কপি সবার সামনে এনে রাখলেন। এরপর তিনি কোর’আনের কপিটাকে আঙ্গুল দিয়ে জোরে টোকা মেরে বললেন, “হে কোর’আন, তুমি মানুষকে তোমার কথা জানাও।” উপস্থিত লোকজন আলী (রা)-কে বললেন, “হে আমীরুল মুমিনীন, আপনি কোর’আনের কাছে কি জিজ্ঞেস করছেন? এটা তো কালি আর কাগজ ছাড়া কিছুই নয়। আমরা তো এর মধ্যে যা দেখছি, তা নিয়ে কথা বলছি। আপনি এসব করার উদ্দেশ্য কি?” আল বিদায়া, ৭ম খণ্ড, ৫০৬
আলী (রা) উপরোক্ত ঘটনা দিয়ে খারিজিদেরকে বুঝাতে চেষ্টা করেছেন যে, কোর’আন নিজে নিজেই কোনো কথা বলতে পারে না। কোনো না কোনো মানুষই কোর’আনের বুঝ দিয়ে আইন প্রণয়ন করতে হয়। সুতরাং, খারিজিরা যে বলছে, “আল্লাহর আইন ছাড়া কোনো মানুষের আইন আমরা মানি না”, এটা আসলে ভুয়া কথা। অর্থাৎ, কোনো না কোনো মানুষকেই আইন প্রণয়ন করতে হয়। আলী (রা) বলেন, “খারিজিদের শ্লোগানটা ঠিক আছে, কিন্তু এর দ্বারা তাদের উদ্দেশ্য খুব খারাপ”।(৬)
এরপর আলী (রা) খারিজিদেরকে হুদাইবিয়া সন্ধির উদাহরণ তুলে ধরেন। হুদাইবিয়া সন্ধির অনেক আগেই এই আয়াত নাযিল হয়েছিলো যে – “আল্লাহ ছাড়া কারো আইন প্রণয়ন করার অধিকার নেই” (إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ)। কিন্তু, রাসূল (স) হুদাইবিয়ার সন্ধিতে কাফেরদের সকল নিয়ম মেনে নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আল্লাহ তায়ালা নিজেই হুদাইবিয়ার সন্ধিকে ‘ফাতহুম মুবিন’ বা প্রকাশ্য বিজয় বলেছেন। সুতরাং, এ থেকেও বুঝা যায়, আল্লাহ তায়ালা নিজেই মানুষকে আইন প্রণয়ন করার অধিকার দিয়েছেন।
আলী (রা)-এর কোনো যুক্তিই খারিজিরা শুনলো না, বরং তারা আলী (রা)-কে কাফির ঘোষণা করে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। যদিও খারিজিদেরকে আলী (রা) যুদ্ধে হারিয়ে দেন, কিন্তু খারিজিদের সেই চিন্তা আজো বিদ্যমান। ইসলামী রাজনীতির কথা বলতে গিয়ে এখনো অনেকে বলেন – “আল্লাহ ছাড়া আইন প্রণয়ন করার অধিকার আর কারো নেই”।
এ বিষয়টিকে অনেক সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছেন আমাদের ক্লাসিক্যাল স্কলারগণ। যেমন, ইমাম রাজি বলেন – “আইন দুই ধরণের। পার্থিব আইন ও আখিরাতের আইন। পার্থিব আইন প্রণয়নের সুযোগ আল্লাহ তায়ালা মানুষকেও দিয়েছেন। কিন্তু আখিরাতের আইন প্রণয়নের সুযোগ কেবল আল্লাহ তায়ালার জন্যে নির্দিষ্ট। যদি আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে মানুষকে আইন প্রণয়ন করার বা আদেশ করার সুযোগ না দিতেন, তাহলে কোনো দাশকে তার মুনিব আদেশ দিতে পারতো না, কোনো স্ত্রীকে তার স্বামী আদেশ দিতে পারতো না, কোনো সন্তানকে তার বাবা-মা আদেশ দিতো পারতেন না, কোনো সরকার জনগণকে আদেশ দিতে পারতো না, এবং কোনো নবী-রাসূল তাঁদের উম্মতকে আদেশ দিতে পারতেন না।” ইমাম রাজি, মাফাতিহুল গায়েব, সূরা ২৮/ কাসাস – ৭০ অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়াও দুনিয়াতে অন্য মানুষদের আইন প্রণয়ন করার ও প্রয়োগ করার অধিকার রয়েছে।
ইমাম গাজালীর মতে, মানুষ যে আইন-ই প্রণয়ন করুক, অথবা যাই করুক না কেন, সকল কাজ-ই আল্লাহর কাজ। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া মানুষ কোনো কাজ-ই করতে পারে না। ইমাম গাজালী তাঁর মতের পক্ষে একটি আয়াতকে রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন – “আল্লাহ তোমাদেরকেও সৃষ্টি করেছেন, এবং তোমারা যা কর, তাও আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন।” সূরা ৩৭/ সাফফাত – ৯৬ অর্থাৎ, ইমাম গাজালীর মতে, “আল্লাহ ছাড়া আইন দেয়ার অধিকার কারো নেই” এর মানে হলো, “আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোনো ব্যক্তি কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে না”
কোর’আনের অনেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে ন্যায়বিচার করার জন্যে আদেশ দিয়েছেন। যেমন, আল্লাহ তায়ালা বলেন – “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে ন্যায়বিচার, সদাচরণ, এবং আত্মীয়-স্বজনকে দান করার জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন।” সূরা ১৬/নাহল – ৯০। এ আয়ত থেকেও বুঝা যায় আল্লাহ তায়ালা মানুষকে আইন প্রণয়ন করার ও প্রয়োগ করার অধিকার দিয়েছেন, কিন্তু সেটা ন্যায়ভাবে হতে হবে।
তুরস্কের ইসলামী স্কলার বদিউজ্জামান সাইদ নুরসিকে জিজ্ঞাস করা হয়েছিলো, “আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও মানুষের সার্বভৌমত্বের মাঝে কোনো বিরোধ আছে?” এর জবাবে নুরসী বলেন, “ক্ষমতা দুই প্রকার। মুলক ও মালাকুত। মুলক মানে পার্থিব ক্ষমতা এবং মালাকুত মানে অপার্থিব ক্ষমতা। পার্থিব জগতে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করার স্বাধীনতা দিয়েছেন। কিন্তু অপার্থিব বিষয়ে ক্ষমতা প্রয়োগ করার মালিক একমাত্র আল্লাহ, মানুষ চাইলেও কোনো অপার্থিব বিষয়ে তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে না। যেমন, মানুষ চাইলেও সূর্যকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত করতে পারবে না।
একই বিতর্ক আমরা ইব্রাহীম (আ) এবং নমরুদের মাঝে দেখতে পাই। সেখানেও দুই ধরণের ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। ইব্রাহীম (আ) যখন নমরুদকে বললেন, “আমার প্রভু জীবন দন করেন, এবং মৃত্যু ঘটান”। তখন নমরুদ বললো, “আমিও তো জীবন দান করি, এবং মৃত্যু ঘটাই”। এরপর ইব্রাহীম (আ) যখন বললেন, “আমার প্রভু পূর্ব দিক থেকে সূর্য উদিত করেন, তুমি পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত করো”। তখন নমরুদ হতবুদ্ধি হয়ে গেলো। সূত্র – সূরা ২/বাকারা – ২৫৮
উপরোক্ত বিষয়গুলো থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, ক্ষমতা দুই ধরণের। এক ধরণের ক্ষমতা প্রয়োগ করার স্বাধীনতা আল্লাহ তায়ালা মানুষকে দিয়েছেন। কিন্তু আরেক ধরণের ক্ষমতা প্রয়োগ করার কোনো স্বাধীনতা ও সুযোগ মানুষের নেই।
আধুনিক গণতন্ত্রে যখন বলা হয়, “জনগণ-ই সকল ক্ষমতার উৎস”, এর মানে এই নয় যে, জনগণ ইচ্ছে করলেই সূর্যকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত করতে পারবে। বরং এই কথার মানে হচ্ছে একক কোনো ব্যক্তি নয়, বরং সকল জনগণ সম্মিলিতভাবে আইন প্রণয়ন করবে এবং তা প্রয়োগ করবে। সুতরাং, “আল্লাহ ছাড়া কারো আইন প্রণয়ন করার অধিকার নেই” (إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ) –এ আয়াত দিয়ে মানুষের ক্ষমতাকে অস্বীকার করা হয় না।
আরেকটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন, সহীহ মুসলিমে এসেছে একটি হাদীসে কুদসী, সেখানে বলা হচ্ছে,
“রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিনে বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ হয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমার খোজ-খবর রাখনি। সে বলবে, হে পরওয়ারদিগার! আমি কী করে তোমার খোজ-খবর করব, অথচ তুমি সারা জাহানের প্রতিপালক। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল, আর তুমি তার সেবা করনি। তুমি কি জানতে না যে, তুমি তার সেবা-শুশ্রূষা করলে তার কাছেই আমাকে পেতে।
হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়োছিলাম; কিন্তু তুমি আমাকে খেতে দাওনি। সে (বান্দা) বলবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি কি করে তোমাকে আহার করাতে পারি! তুমি তো সারা জাহানের প্রতিপালক। তিনি (আল্লাহ) বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে আহার চেয়েছিল? তুমি তাকে খেতে দাওনি। তুমি কি জানতে না যে, যদি তুমি তাকে আহার করাতে, তাহলে তা অবশ্যই আমার কাছে পেতে।
হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে পানীয় চেয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমাকে পানি পান করাওনি। সে (বান্দা) বলবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি কী করে তোমাকে পান করাব, অথচ তুমি সারা জাহানের প্রতিপালক। আল্লাহ বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানীয় চেয়েছিল, তুমি তাকে পান করাওনি। যদি তুমি তাকে পান করাতে, তবে তা আমার কাছে পেতে। (সহীহ মুসলিম, ইফা, ৬৩২২)
এ হাদীসে স্পষ্ট যে, মানুষের সেবা করাই মানেই আল্লাহর সেবা করা। সুতরাং, মানুষের ভালোর জন্যে যদি কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়, তাহলে সেটা আল্লাহর আইন হিসাবেই বিবেচিত হতে পারে। এ হাদীসে জনগণকে আল্লাহর মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়নি, এবং জনগণের সেবা করাকে আল্লাহর সেবা বলায় শিরক হয়নি। একইভাবে, জনগণের ইচ্ছাকেও আল্লাহর ইচ্ছা হিসাবে না দেখে আল্লাহর বিপরীত ইচ্ছা হিসাবে দেখা ঠিক নয়।
সূত্র:
১)
لَا حُكْمَ إِلَّا لِلَّهِ، الرَّوَاحَ الرَّوَاحَ إِلَى الْجَنَّةِ [البداية والنهاية ط إحياء التراث 7/ 320]
২)
{وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ} [المائدة: 44]
৩)
{وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِنْ أَهْلِهَا إِنْ يُرِيدَا إِصْلَاحًا يُوَفِّقِ اللَّهُ بَيْنَهُمَا إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا خَبِيرًا} [النساء: 35]
৪)
فَحَكَّمْتَ فِي يدن اللَّهِ وَلَا حُكْمَ إِلَّا لِلَّهِ
[البداية والنهاية ط إحياء التراث 7/ 310]
৫)
أَيُّهَا الْمُصْحَفُ! حَدِّثِ النَّاسِ فَنَادَاهُ النَّاسُ فَقَالُوا: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ مَا تَسْأَلُ عَنْهُ إِنَّمَا هُوَ مِدَادٌ فِي وَرَقٍ، وَنَحْنُ نَتَكَلَّمُ بِمَا رُوِّينَا مِنْهُ، فَمَاذَا تُرِيدُ؟
[البداية والنهاية ط إحياء التراث 7/ 311]
৬)
هذه كلمة حق يراد بِهَا بَاطِلٌ
[البداية والنهاية ط إحياء التراث 7/ 312]
৭)
وَلَهُ الْحُكْمُ فَهُوَ إِمَّا فِي الدُّنْيَا أَوْ فِي الْآخِرَةِ فَأَمَّا فِي الدُّنْيَا فَحُكْمُ كُلِّ أَحَدٍ سِوَاهُ إِنَّمَا نُفِّذَ بِحُكْمِهِ، فَلَوْلَا حُكْمُهُ لَمَا نُفِّذَ عَلَى الْعَبْدِ حُكْمُ سَيِّدِهِ وَلَا عَلَى الزَّوْجَةِ حُكْمُ زَوْجِهَا وَلَا عَلَى الِابْنِ حُكْمُ أَبِيهِ وَلَا عَلَى الرَّعِيَّةِ حُكْمُ سُلْطَانِهِمْ وَلَا عَلَى الْأُمَّةِ حُكْمُ الرَّسُولِ، فَهُوَ الْحَاكِمُ فِي الْحَقِيقَةِ، وَأَمَّا فِي الْآخِرَةِ فَلَا شَكَّ أَنَّهُ هُوَ الْحَاكِمُ، لِأَنَّهُ الَّذِي يَتَوَلَّى الْحُكْمَ بَيْنَ الْعِبَادِ فِي الْآخِرَةِ، فَيَنْتَصِفُ لِلْمَظْلُومِينَ مِنَ الظَّالِمِينَ.
[تفسير الرازي = مفاتيح الغيب أو التفسير الكبير 25/ 12]
৮)
{ وَاللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ} [الصافات: 96]
৯)
{إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَالْإِحْسَانِ وَإِيتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ } [النحل: 90]
১০)
{أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِي حَاجَّ إِبْرَاهِيمَ فِي رَبِّهِ أَنْ آتَاهُ اللَّهُ الْمُلْكَ إِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّيَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ قَالَ أَنَا أُحْيِي وَأُمِيتُ قَالَ إِبْرَاهِيمُ فَإِنَّ اللَّهَ يَأْتِي بِالشَّمْسِ مِنَ الْمَشْرِقِ فَأْتِ بِهَا مِنَ الْمَغْرِبِ فَبُهِتَ الَّذِي كَفَرَ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ} [البقرة: 258]