কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি
কওমি মাদ্রাসায় পড়ার সৌভাগ্য হয়নি, তাই অনেক কিছুই বুঝি না। তবে, মনে হয়, কওমি মাদ্রাসাকে সরকারীকরণ করলে অনেক ভালো হবে।
কারণ,
এক।
সরকারি পদ্ধতি মানেই ধর্মহীন পদ্ধতি নয়। আজ হয়তো সেক্যুলার মানুষেরা সরকার পরিচালনা করছে, কিন্তু কাল তো হয়তো ধার্মিক মানুষেরা সরকার পরিচালনা করবে। গত ৭০ বছরে এ দেশের কত উত্থান-পতন হল, আগামী ৭১ বছরে আরো কত উত্থান-পতন হবে, তা এখনি বলে দেয়া সম্ভব নয়।
দুই।
অন্য গ্রহের মানুষ দ্বারা পরিচালিত কোনো পদ্ধতি নাম সরকার নয়। হোক কওমি, আলিয়া বা বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের বাবা-মায়ের টাকা দিয়েই সরকার চলে। দেশকে উন্নত করি আমরাই। আমরা সরকারের কর্মচারী নই, বরং সরকার নিজেই কর্মচারী হিসাবে আমাদের জন্যে কাজ করে। সরকারি কাজ করা মানে সরকারের কর্মচারী হওয়া নয়, বরং মানুষের সেবা করা। কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা এমনিতেই দেশের অনেক সেবা করে, সরকারীকরণের ফলে এই সেবা আরো অনেক বিস্তৃত হবে।
তিন।
কওমি, আলিয়া ও বিশ্ববিদ্যালয় – এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের মাঝে সমন্বয় ও মেলবন্ধন প্রয়োজন। কারণ, আমাদের প্রত্যেকের-ই কিছু না কিছু ক্রুটি আছে। সবাই একসাথে কাজ করলে দেশের সামষ্টিক জ্ঞান ও কাজের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এবং সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজেকে সেরা বলার মানসিকতা লোপ পাবে।
চার।
জীবনে একবার খতম পড়েছিলাম। কিন্তু, খতম শেষে লোকটা টাকা দেয়ার সময় মনে হয়েছিল, সে আমাকে ভিক্ষা দিচ্ছে। আমি তো তার কাছে টাকা চাইনি। তাহলে সে কেন আমাকে টাকা দিয়ে নিচু করল?
যাই হোক, সত্যিকারের আলেমরা চায়, বিনামূল্যে মানুষকে সত্যের পথে দাওয়াত দিতে। নিজের দেশের সেবা করে নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে মানুষকে বিনামূল্যে আল্লাহর পথে দাওয়াত দিলে সে দাওয়াত অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হয়।
পাঁচ।
বাংলাদেশে ইসলামী মূল্যবোধকে সমুন্নত করার ক্ষেত্রে, আমার মনে হয়, কওমি মাদ্রাসার সরকারীকরণ খুবই প্রয়োজন। সরকার ও যারা এ কাজে অবদান রাখছেন, তাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।