কোর’আনের এতো ব্যাখ্যা কেন?
কোর’আনের এতো ব্যাখ্যা কেন?
এই প্রশ্নের উত্তর আছে নিম্নক্ত হাদিসে।
سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: سَمِعْتُ هِشَامَ بْنَ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، يَقْرَأُ سُورَةَ الفُرْقَانِ عَلَى غَيْرِ مَا أَقْرَؤُهَا، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْرَأَنِيهَا،وَكِدْتُ أَنْ أَعْجَلَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَمْهَلْتُهُ حَتَّى انْصَرَفَ، ثُمَّ لَبَّبْتُهُ بِرِدَائِهِ، فَجِئْتُ بِهِ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: إِنِّي سَمِعْتُ هَذَا يَقْرَأُ عَلَى غَيْرِ مَا أَقْرَأْتَنِيهَا، فَقَالَ لِي: «أَرْسِلْهُ» ، ثُمَّ قَالَ لَهُ: «اقْرَأْ» ، فَقَرَأَ، قَالَ: «هَكَذَا أُنْزِلَتْ» ، ثُمَّ قَالَ لِي: «اقْرَأْ» ، فَقَرَأْتُ، فَقَالَ: «هَكَذَا أُنْزِلَتْ إِنَّ القُرْآنَ أُنْزِلَ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ، فَاقْرَءُوا مِنْهُ مَا تَيَسَّرَ»
[صحيح البخاري 3/ 122]
উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন – “আল্লাহর রাসূল (স) আমাকে যেভাবে সূরা ফুরকান শিখিয়েছেন, এবং আমি যেভাবে সূরা ফুরকান পড়ি, তা থেকে ভিন্নভাবে হিশাম ইবনু হাকীমকে সূরা ফুরকান পড়তে শুনলাম। আমি হিশামকে তাৎক্ষণিক বাধা দিতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু তার সালাত শেষ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। এরপর তার গলায় চাদর পেঁচিয়ে তাকে রসূল (স)-এর কাছে নিয়ে এলাম এবং রাসূলকে বললাম – “আপনি আমাকে যেভাবে সূরা ফুরকান পড়তে শিখিয়েছেন, আমি হিশামকে তা থেকে ভিন্নভাবে পড়তে শুনেছি”।
রাসূল (সা) আমাকে বললেন, “হিশামকে ছেড়ে দাও”। তারপর হিশামকে বললেন “তুমি পড়ো তো”। এরপর হিশাম পড়লো। তারপর রাসূল (স) বললেন, এভাবেই তো নাযিল হয়েছিলো।
এরপর রাসূল (স) আমাকে পড়তে বললেন, তখন আমিও পড়লাম। এরপর রাসূল (স) বললেন, “এভাবেই তো নাযিল হয়েছে। কুরআন সাত হরফে নাযিল হয়েছে। তাই যেরূপ সহজ হয় তোমরা সেরূপেই তা পড়।”
[সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৪১৯]
এ হাদিস থেকে অনেকগুলো অনুসিদ্ধান্তে আসা যায়।
১) উমর (রা) কেবল নিজের জানাটাকেই শুদ্ধ মনে করেছিলেন, অথচ হিশাম (রা)-এর জানাটাও শুদ্ধ ছিলো। একাধিক মানুষের ভিন্ন ভিন্ন জানাও একই সাথে শুদ্ধ হতে পারে।
২) কোর’আনের ছোট্ট একটি সূরা অর্থাৎ সূরা ফুরকানের যদি সাতটি উচ্চারণ নীতি থাকে, তাহলে কোর’আনের একটি আয়াতের অসংখ্য ব্যাখ্যা হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়।
৩) কোর’আন পড়ার ও জানার ক্ষেত্রে রাসূল (স) সহজ করাকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন। একজনের মতোই হুবহু অন্যজনকে পড়তে হবে, অথবা, একজনের মতোই হুবহু আরেকজনকে কোর’আন বুঝতে হবে, এমন কোনো নিয়ম নেই।
3 মার্চ, 2019, 3:05 PM