কোরআন ধীরে সুস্থে বারবার পড়তে হয়

কোরআন যখন প্রথম পড়লাম, সেখানে নবীদের ঘটনাবলী ছাড়া আর তেমন কিছুই চোখে পড়েনি। কেমন কেমন জানি লাগত; অন্য বইয়ের মত মজা পেতাম না।

বড় এক আলেমকে একথা বলার পর তিনি পরামর্শ দিলেন- ‘থেমে থেমে পড়, তাড়াহুড়া করো না। রাসূল (স)-এর উপর যে কোর’আন ২৩ বছরে নাযিল হয়েছে, তুমি কেনো তা ১ মাসে শেষ করতে চাও?’

পরামর্শটা খুব মনে ধরেছে। আস্তে আস্তে পড়া শুরু করলাম। আগে যদি ১ ঘণ্টায় ৩০ আয়াত পড়তাম; এখন ১/২ আয়াত পড়ি। আলহামদুলিল্লাহ। বেশ ভালো লাগছে। এখন অনেক কিছুই চোখে পড়ছে।

যেমন…

আগে জানতাম, বন্ধুদেরও দেখতাম, ছেলে-মেয়েরা তাদের পরিবারকে না জানিয়েই বিয়ে করে ফেলছে। ওদের জিজ্ঞেস করলে ওরা বলত, ‘দু’জন দু’জনকে পছন্দ করলেই বিয়ে করা যায়, জাস্ট ইজাব-কবুল করলেই হয়, পরিবারের অনুমতি নিতে হয় না।’

কিন্তু আজ দেখলাম কোরআনে বলছে ভিন্ন কথা। সূরা নিসার ২৫ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা (পুরুষরা) তাদেরকে (নারীদের) তাদের পরিবারের অনুমতি নিয়ে বিয়ে কর।”

এ আয়াত দেখার পর দু’টি প্রশ্ন মনে জাগলো…

এক. বন্ধুদের অনেকেই কেনো নিজেদের পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করছে?
দুই. কোরআনে কেনো মেয়ের পরিবার থেকে অনুমতি নিয়ে বিয়ে করার গুরুত্ব দিচ্ছে?

প্রথম প্রশ্নটির উত্তর আমার জানা নেই। মনে হয়, ছেলে-মেয়েরা তাদের পরিবারকে বিষয়টি জানালেও পরিবার তা গুরুত্বের সাথে নেয় না। এবং ছেলে-মেয়েদের কনসার্নের জায়গাটা তাঁরা ধরতে পারেন না।

দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর বন্ধুদের আচার-আচরণ থেকে খুঁজে পেয়েছি। ছেলেরা সাধারণত মেয়েদের চেয়ে একটু বেশি চালাকি করে। হেনো-তেনো নানা কথা বলে মেয়েদের বুঝায় যে, সে অনেক কিছু। আসলে পুরোটাই ফাঁকা, মিথ্যে, বাজে, ভিত্তিহীন।

মেয়েরা তাদের পরিবার দিয়ে ছেলেটিকে যাচাই না করে নিলে, নিশ্চিত প্রতারণার স্বীকার হয়। এমন ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি বহু দেখেছি। অবশেষে শুধু কান্না-ই মেয়েদের সাথী হয়।

–এ কারণে বোধ হয় আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ছেলেদেরকে মেয়েদের পরিবার থেকে অনুমতি নিয়ে বিয়ে করতে বলেছেন।

যা বলছিলাম, কোরআনে এমন অনেক কিছুই আছে, যা দ্রুত পড়ার ফলে আমাদের চোখে পড়ে না। কোরআনকে বুঝতে হয় ধীরে ধীরে। সময় নিয়ে।

কোরআন বুঝার অনেকগুলো স্তর আছে। প্রথম কয়েকবার পাঠ করলেই সব কিছু বোঝা যায় না। ধীরে সুস্থে বারবার পড়তে হয়।

June 25, 2015 at 3:38 PM 

আরো পোস্ট