ক্ষুদে চিন্তা – ২
৫১
বিয়ে মানে একটি অনিবার্য ঝামেলাকে হাসি মুখে মেনে নেওয়া।
৫২
নিম্ন মানের লোকেরা ব্যক্তির সমালোচনা করে, মধ্যম মানের লোকেরা ঘটনার সমালোচনা করে, আর উচ্চ মানের লোকেরা চিন্তার সমালোচনা করে।
৫৩
আমরা সম্পদ অর্জন করি গোপনে, যাতে অন্যরা এসে আমাদের সম্পদ না নিয়ে যেতে পারে। আর, আমরা জ্ঞান অর্জন করি প্রকাশ্যে, যাতে অন্যরা আমাদের থেকে জ্ঞান নিতে আসে। জ্ঞান যদি সম্পদের মতো হতো, তাহলে আমরা গোপনে জ্ঞান অর্জনের জন্যে আমরা প্রতিযোগিতা করতাম। আর সম্পদ যদি জ্ঞানের মতো হতো, তাহলে আমাদের সম্পদ অন্যকে দেয়ার জন্যে আমারা ব্যকুল হয়ে যেতাম।
৫৪
অলস মানুষরাই কেবল স্বপ্ন দেখে। পরিশ্রমী মানুষরা খুব বেশি স্বপ্ন দেখার সময় পায় না।
৫৫
ব্রিটিশরা ভারতকে যেমন ভেঙ্গে দিয়েছে, ঠিক একইভাবে এবং একই সময়ে উসমানী খেলাফতকেও তারা ভেঙ্গে দিয়েছিলো। এখন ইন্দোনেশিয়াকেও ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা করছে। এভাবে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ভেঙ্গে দেয়ার জন্যে ইউরোপকে অস্ত্র হাতে নিতে হয় না। আইএমএফ এর একটা অর্থনৈতিক নিয়ম পরিবর্তন করে দিলেই হয়।
– ওয়েল হাল্লাক, বিশ্ববিখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।
৫৬
“সেক্যুলারিজম এখন স্রষ্টার স্থান দখল করে নিয়েছে। ফলে আমরা স্রষ্টার জন্যে জীবন দিতে প্রস্তুত না থাকলেও, সেক্যুলার রাষ্ট্রের জন্যে জীবন দিতে প্রস্তুত থাকি।”
– ওয়েল হাল্লাক, বর্তমান সময়ের প্রসিদ্ধ রাজনীতি বিশেষজ্ঞ।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=WFAqQiIVsF8&t=4699s
৫৭
ইবনে তাইমিয়া, ইবনুল কায়্যুম, অথবা হাসানুল বান্না, তাঁরা প্রত্যেকে ইসলামী চিন্তার ক্ষেত্রে ছিলেন একজন সুন্নী, রাজনৈতিকভাবে ছিলেন একজন সালাফী, এবং ব্যক্তিগতভাবে ছিলেন একজন সূফী।
– উস্তাদ ইউছুফ আল কারাদাভী।
৫৮
সুলতান আবদুল হামিদ যখন মুসলিম জাহানের খিলাফতের দায়িত্বে, তখন ব্রিটিশরা আমাদেরকে শোষণ করছিলো।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে ভারতের মুসলিমদের জন্যে সুলতান আব্দুল হামিদ খান অসাধারণ কিছু ভূমিকা রেখেছিলেন।
তুরস্কের বিখ্যাত একটি সিরিয়াল থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশের বাংলা সাব-টাইটেল বসিয়ে দিলাম।
৫৯
মানুষ হলো বিশ্বের ছোট্ট একটি রূপ
বিশ্ব হলো মানুষের বৃহৎ একটি রূপ।
الإنسان هو العالم المصغر
والعالم هو الإنسان المنفتح
ব্যাখ্যা:
মানুষের চোখ আকাশের তারার মতো, মানুষের চুল বনের মতো, মানুষের পশম গাছের মতো, মানুষের রক্ত নদীর মতো, মানুষের শরীরের হাড় পাথর শিলার মতো, মানুষের হৃদয় সূর্যের মতো, শরীরের প্রতিটি কোষ সেই হৃদয়ের চতুঃপার্শ্বে ঘুরছে। মানুষের রূহ হলো এই মহাবিশ্ব নিজেই।
৬০
বুদ্ধিজীবী বা সাধারণ মানুষদের দিয়ে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি তাঁরাই করতে পারেন, যারা বুদ্ধিজীবীদের চিন্তাকে প্রায়োগিক-ভাবে সাধারণ মানুষদের কাছে নিয়ে যান।
৬১
আমরা কথায় কথায় বলি, “বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষটি এমন বা তেমন”। এ বাক্যে “বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ” শব্দটির পরিবর্তে “জীবনের দৃষ্টিকোণ” শব্দটি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
কারণ,
মুসলিমদের দৃষ্টিভঙ্গি কেবল এ বিশ্বে বা পৃথিবীতে সীমাবদ্ধ নয়। মুসলিমদের প্রতিটি চিন্তা আখিরাতের সাথে সম্পর্কিত। এ কারণে, কেবল ‘বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ’ দিয়ে মুসলিমরা কোনো কিছু ভাবতে পারে না। দুনিয়া ও আখিরাত দুটি মিলিয়ে আমাদের জীবন। সুতরাং, “বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ” পরিভাষাটির পরিবর্তে আমরা “জীবনের দৃষ্টিকোণ” পরিভাষাটি ব্যবহার করতে পারি।
৬২
মসজিদের মুসল্লি: হুজুর, জুম্মার নামাজের খুতবা আরবিতে দিলেন, নামাজও আরবিতে পড়ালেন, মুনাজাতও আরবিতে দিলেন, কিন্তু, সবশেষে মসজিদের টাকা উঠানোর সময় কেনো বাংলায় বললেন?
ইমাম সাহেব: টাকা উঠানোর কথা আরবিতে বললে তো কেউ বুঝবে না, এবং মসজিদের জন্যে টাকাও দিবে না, তাই টাকা উঠানোর কথা বাংলায় বলেছি।
৬৩
বছরের সবচেয়ে বেশি মিথ্যা কথা বলার ও লিখার দিন হলো ১৬ ডিসেম্বর।
৬৪
আমাদের প্রিয়জন যদি আমাদের চেয়ে অন্য কাউকে বেশি ভালোবাসে, তাহলে আমরা তা সহ্য করি না।
ঠিক তেমনি,
আল্লাহর প্রিয় বান্দারা যদি তাঁকে ছেড়ে অন্য কাউকে বেশি ভালোবাসে, তাহলে তিনিও তা সহ্য করেন না।
৬৫
“শিয়া ও সুন্নি হলো মুসলিমদের দুটি রাজনৈতিক দল। কনজারভেটিভ ও ডেমোক্রেটিক পার্টি যেমন একই দেশের দুটি রাজনৈতিক দল, শিয়া ও সুন্নীরাও একই মুসলিম জাতীর দুটি রাজনৈতিক দল।”
– শাইখ ইয়াসির ক্বাদী
৬৬
ইমাম মেহদির আগমনের সংবাদ যারা দিয়ে থাকেন, তাঁরা বলেন, ইমাম মেহদী আসবেন খোরাসান অঞ্চল থেকে। খোরাসান হলো মূলত ইরানের একটি অঞ্চল, সাথে আফগানিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের সীমান্ত রয়েছে। খোরাসান অঞ্চলের মুসলিমরা প্রধানত শিয়া। সে হিসাবে ইমাম মেহদি কি একজন শিয়া হবেন?
ইমাম মেহদি যদি একজন শিয়া মুসলিম হয়ে থাকেন, সুন্নি মুসলিমরা কি তাঁর সাথে যোগ দিবেন?
ইমাম মেহদি একজন শিয়া মুসলিম হবার কারণেই কি মক্কা দখল করবেন?
৬৭
আলী – তুমি ওই তাম্বু, মানে বোরকা পর কেন?
শবনম – স্বচ্ছন্দে যেখানে খুশী আসা-যাওয়া করা যায় বলে। আহাম্মুক ইউরোপীয়ানরা ভাবে, ওটা পুরুষের সৃষ্টি, মেয়েদের লুকিয়ে রাখবার জন্য। আসলে ওটা মেয়েদের আবিষ্কার – আপন সুবিধের জন্য।
[সৈয়দ মুজতবা আলী’র “শবনম” উপন্যাস থেকে]
৬৮
অন্যের ভালোবাসা দিয়ে শুরু হয় আমাদের জীবন, অন্যের চিন্তা দিয়ে নয়।
৬৯
নারী ও পুরুষকে আল্লাহ তায়ালা পরস্পর ভিন্নভাবে সৃষ্টি করেছেন। ফলে, উভয়ের চিন্তা করার ধরণ ভিন্ন, অনুভব করার আবেগ ভিন্ন, কথা বলার ভাষা ভিন্ন, একে অপরকে বুঝার উপায় ভিন্ন, প্রতিক্রিয়া দেখানোর পন্থা ভিন্ন, প্রতিবাদ করার পদ্ধতি ভিন্ন, ভালোবাসার ছন্দ ভিন্ন, প্রয়োজন ও ইচ্ছা ভিন্ন।
নারী-পুরুষ উভয়ের মাঝে যখন ভুল বুঝাবুঝি শুরু হয়, তখন একটু অপেক্ষা করা উচিত; এবং নিজেকে নিজে প্রশ্ন করা উচিত যে, আপনি কি আসলেই আপনার প্রতিপক্ষের ভিন্ন ভাষাটি সঠিকভাবে অনুবাদ করতে পেরেছেন?
– John Gray, ‘Men Are from Mars, Women Are from Venus’.
৭০
মানুষ দুঃখ পেলে অতীতের দিনগুলোকে মনে করে, অথচ মনে করা উচিত ভবিষ্যতের দিনগুলোকে।
আজকে যে কারণে আপনার যতটা দুঃখ মনে হচ্ছে, ১ বছর পর এই দুঃখটিকে কোনো কিছুই মনে হবে না।
৭১
তিন ধরণের মানুষকে খুব ভয় পাই।
১। যারা চিন্তা-প্রতিচিন্তা নিয়ে বিতর্ক না করে, ব্যক্তি নিয়ে বিতর্ক করেন।
২। যারা অর্থ ও ভাবের প্রতি নজর না দিয়ে, অক্ষর নিয়ে পড়ে থাকেন।
৩। যারা সুদূরপ্রসারী চিন্তা না করে, প্রতিদিনের রাজনীতি ও ঘটনা বর্ণনা করেন।
৭২
ধরুন, আমি ও আপনি মিলে একটু কোম্পানি খুললাম। কোম্পানির ম্যানেজার আপনি, এবং আমি হলাম শ্রমিক। ম্যানেজার হিসাবে আপনার কাজ হলো কোম্পানির বিল্ডিংর ভিতরে বসে বসে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা। আর আমার কাজ হলো কোম্পানির পণ্য বাজারে বিক্রি করে, কোম্পানিকে লাভবান করা।
পরিবার নামক কোম্পানিতে নারী ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন, এবং পুরুষ শ্রমিকের দায়িত্ব পালন করেন। এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হলো, খাদিজা (রা) ও রাসূল (স)-এর জীবন।
[একটি ভবিষ্যৎ বিজ্ঞপ্তি]
৭৩
নবী রাসূলদের সুন্নাত ছিল, অন্যের সাথে নিজের খাবার শেয়ার করা।
আর, আমাদের সুন্নাত হলো, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের খাবার শেয়ার করা।
খাবার দিয়ে নবী-রাসূলগণ অন্যদের খুশী করতেন, কিন্তু আমরা অন্যদের কষ্ট দেই।
পুনশ্চ: কেউ খাবারের ছবি আপলোড দিলে, বুঝা যায় যে, লোকটি জীবনের প্রথম এই খাবার খাচ্ছেন। তাই, এই ভেবে আমাদেরও দুঃখ হয় না।
৭৪
কোর’আন এমন একটি গ্রন্থ, যা ভয় দিয়ে নয়, বরং ভালোবাসা দিয়ে শুরু হয়। এর প্রথম বাক্য “পরম করুণাময় ও দয়াময় আল্লাহর নামে শুরু”।
৭৫
ভালোবাসা ও ভয়, এ দুটি অনুভূতি মানুষের জন্যে খুবই প্রয়োজন। ভালোবাসার কারণে মানুষ যে কোনো কিছু করার জন্যে উদ্বুদ্ধ হয়, আর, ভয়ের কারণে মানুষকে কাজটি সঠিকভাবে করতে হয়।
ভালোবাসা না থাকলে মানুষ অলস হয়ে যায়, আর, ভয় না থাকলে মানুষ বেপরোয়া হয়ে যায়।
৭৬
হজ্জের একটি অপরিহার্য কাজ হলো, সাফা ও মারওয়া নামক দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাতবার দৌড় দেয়া বা দ্রুত আসা-যাওয়া করা।
সকল মুসলিমকে এই কাজটি করতে হয়, একজন মহীয়সী নারীকে অনুসরণ করার জন্যে।
৭৭
টার্কি ভাষায় কথা বলেন ৭০ মিলিয়ন মুসলিম, আর বাংলা ভাষায় কথা বলেন ১৭০ মিলিয়ন মুসলিম। অর্থাৎ, টার্কি ভাষার চেয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলা মুসলিমের সংখ্যা ১০০ মিলিয়ন বেশি।
কিন্তু, টার্কি ভাষায় ইসলামি ক্লাসিক্যাল বইগুলোর যে পরিমাণ অনুবাদ হয়েছে, তার ৫% ও বাংলা ভাষায় হয়নি।
কারণটা কি? আমাদের তো আলেম ওলামার অভাব নেই।
৭৮
জ্ঞান ক্ষমতার অধীনে আসা মানে সংঘাত,
ক্ষমতা জ্ঞানের অধীনে আসা মানে শান্তি।
– তাসকুফরুজাদে, তুর্কি দার্শনিক।
৭৯
একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতা অস্বস্তিকর, ওরা বলে। আমি বলি, না। ও-জগতে সুখী থাকার জন্যে এ-জগতের অনুশীলনের নাম একাকীত্ব।
৮০
আমাদের তাহাজ্জুদগুলোও এখন আধুনিক হয়ে উঠেছে। ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদ পড়তো মানুষ, ক’দিন আগেও। আমরা পড়ি ঘুমানোর আগে।
সে যুগে, তাহাজ্জুদের সময়ে আশেপাশের পরিবেশ থাকতো নীরব, নিস্তব্ধতায় ঘেরা। সম্পর্ক সৃষ্টি করা যেতো কেবল আল্লাহর সাথেই। কিন্তু এখন নীরবতা হারিয়ে গেছে ঐ দূরে। ২৪ ঘণ্টাই জেগে থাকে সোশ্যাল মিডিয়া, গভীর রাতেও ডাকে সাড়া দেয়ার মতো কেউ না কেউ থাকেই। ফলে আল্লাহকে ডাকার মত নীরব সময় এখন আমরা কই পাই?
৮১
‘নিজেকে সেরা প্রমাণের চেষ্টা’ এবং ‘নিজে সেরা হবার চেষ্টা’ দুটি বিষয়ের মাঝে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। প্রথমটি নাটকের মঞ্চে অভিনয় করার মতো, এবং দ্বিতীয়টি যুদ্ধের মাঠে জেতার মতো।
৮২
মানুষের নিজস্ব কোনো চিন্তা না থাকলে, তিনি হয় নিজের সাথে নিজে সংগ্রাম করেন, অথবা অন্যের সাথে বিতর্ক করেন।
৮৩
খারেজি কাদেরকে বলা হয়?
যারা নিজেদের ছাড়া অন্যদের খারিজ করে দেয়, তাঁদের খারেজি বলে। অর্থাৎ, খারিজি তাঁরাই, যারা নিজেদের বাদে অন্য কোনো মুসলিমকে বলে যে, “তাঁর ঈমান নেই”।
৮৪
সত্যের স্বভাব তিক্ত, মিথ্যার স্বভাব মিষ্টি।
মাঝে মাঝে মনে হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো, “সত্যকে মিষ্টি ভাষায় উপস্থাপন করা”।
৮৫
যে জ্ঞান মানুষের মাথা থেকে হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না, সে জ্ঞান নষ্ট হয়ে অহংকারে রূপান্তরিত হয়।
৮৬
আমাদের জীবনে তিন ধরণের বন্ধু রয়েছে।
কিছু বন্ধুদের সাথে একত্রীত হলে আল্লাহর কথা মনে পড়ে। এ ধরণের বন্ধুরা হলো আমাদের প্রতিদিনের খাবারের মত, যাদের ছাড়া আমরা চলতে পারি না।
কিছু বন্ধুদের থেকে পার্থিব সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়া যায়। এ ধরণের বন্ধুরা হলো ঔষধের মত, যাদেরকে বিভিন্ন সময়ে আমাদের প্রয়োজন হয়।
কিছু বন্ধুদের সাথে একত্রীত হলে আল্লাহর কথা মনে থাকে না। এ ধরণের বন্ধুরা হলো রোগের মত, এদের থেকে দূরে থাকাই ভালো।
৮৭
আমরা কাকে বেশি ভালোবাসি? এ প্রশ্নের উত্তর অনেক সময় আমরা নিজেরাও জানি না।
কিন্তু বোঝার একটা উপায় আছে, কেবল নামাজে দাঁড়ালেই হলো। নামাজে যেসব বিষয়ের চিন্তা আমাদের মনে আসে, সেগুলোকেই মূলত আমরা বেশি ভালোবাসি।
কেউ নামাজে দাঁড়ালে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়, কারো মনে হয় প্রিয় মানুষের কথা। কেউ লিখার আইডিয়া পায়, কেউ কবিতার ছন্দ মিলায়। কেউবা চিন্তা করে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে, কেউবা হিসাব মিলায় সম্পদের।
আমরা যাকে যতবেশি ভালোবাসি, তাঁর কথাই নামাজে ততবেশি মনে পড়ে।
৮৮
ইসলামের সু-প্রতিষ্ঠিত সভ্যতাকে ধ্বংস করার জন্যে তিনটি বড় ধরণের আক্রমণ হয়েছে।
১। দ্বাদশ শতাব্দীতে ক্রুসেডদের আক্রমণ।
২। মঙ্গোলিয়ানদের আক্রমণ।
৩। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপীয়দের উপনিবেশ।
এই তিনটির মাঝে প্রথম ২টি আক্রমণে বুদ্ধিবৃত্তিক কোনো আক্রমণ ছিলো না। ফলে, মুসলিমরা খুব সহজেই নিজেদের অস্তিত্ব ও সভ্যতাকে রক্ষা করতে পেরেছিলো।
কিন্তু, তৃতীয় আক্রমণটি ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক। এখানেই মুসলিমরা ব্যাপকভাবে পরাজিত হয়। এবং আজো আমরা সেই পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে চলছি।
৮৯
উসমানী খিলাফতের আলেম, স্কলার ও সুলতানদের চারটি বৈশিষ্ট্য ছিল।
১। তাঁরা সবাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
২। তাঁরা আহলে বাইতকে ভালোবাসতেন। এবং তাঁদেরকে স্মরণ করতেন।
৩। তাঁরা বিভিন্ন সুফি ও ইরফানী ধারণা দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন।
৪। গণিত, দর্শন ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁরা মধ্য এশিয়ার ‘মাওয়ারা উন-নহর’ স্কুলের অনুসরণ করতেন।
৯০
খাবার হজম করতে পারলে যেমন শক্তি হয়, রাগ হজম করতে পারলেও তেমন আনন্দ হয়।
৯১
পৃথিবীর অধিকাংশ যুদ্ধ অর্থনৈতিক কারণেই হয়ে থাকে। হোক সেটি ঘরের যুদ্ধ, অথবা, বাহিরের যুদ্ধ।
৯২
ইসলাম যে কোনো গ্রামকে শহর বানিয়ে ফেলে। গ্রামের মানুষ সাধারণত তাদের খাদ্য ও বস্ত্রের জন্যে যাবতীয় পরিশ্রম করে। কিন্তু শহরের মানুষ খাদ্য ও বস্ত্রের পাশাপাশি বিনোদনের জন্যেও পরিশ্রম করে।
ইসলাম যে গ্রামে প্রবেশ করে, সেখানে খাদ্য ও বস্ত্র ছাড়াও মানুষকে আরেকটি কাজ করতে হয়। তা হলো ইবাদাত। আর, ইবাদাত হলো বিনোদনের বিকল্প।
এভাবে সামষ্টিকভাবে ইবাদাত করার মাধ্যমে যে কোনো গ্রাম আস্তে আস্তে শহর হয়ে উঠে। এর একটি প্রমাণ হলো মদিনাতুল মোনাওয়ারা।
৯৩
সমাজের সংজ্ঞা অনুযায়ী, নারীর জন্যে পুরুষের যে ত্যাগ, তার নাম ভালোবাসা।
আর, পুরুষের জন্যে নারীর যে ত্যাগ, তার নাম সেক্রিফাইস বা কম্প্রোমাইজ।
৯৪
যারা ফেইসবুকিং করে, এবং যারা ফেইসবুকিং করে না, উভয়ে কি সমান?
আমার উপলব্ধি হলো, আমরা যারা ফেইসবুকিং করি, তাঁদের চেয়ে যারা ফেইসবুকিং করেন না, তাঁদের সফলতার সম্ভাবনা বেশি। অর্থাৎ, ১০ বছর পর, তাঁরা তত বেশি সফল হবে, যারা এখন যত কম ফেইসবুকিং করে।
৯৫
প্রতিটি মুসলিমকে সূর্য ও সৌরজগত সম্পর্কে জানতে হয়, নামাজ ও রোজার সময় ঠিক করার জন্যে।
প্রতিটি মুসলিমকে পানি-মাটি ও পরিবেশ সম্পর্কে জানতে হয়, নামাজের প্রস্তুতি নেয়ার জন্যে।
প্রতিটি মুসলিমকে ভূগোল ও পৃথিবীর মানচিত্র সম্পর্কে জানতে হয়, কাবা শরীফের দিক নির্ণয় করার জন্যে।
প্রতিটি মুসলিমকে শারীরিকভাবে শক্তিশালী হতে হয়, রোজা রাখার জন্যে।
মুসলিমদেরকে অর্থ-সম্পদের মালিক হতে হয়, যাকাত-দান-সদকা ও কুরবানি করার জন্যে।
সামর্থবান মুসলিমদেরকে বিদেশ ভ্রমণ করতে হয়, হজ্জ ও ওমরাহ পালন করার জন্যে।
৯৬
ভালোবাসা কোনো শ্রমিকের বেতন নয় যে, আগে কাজ পরে ভালোবাসা।
ভালোবাসা হলো জ্বালানি তেলের মতো, কাউকে যতটুকু ভালোবাসাবেন, তিনি আপনার জন্যে ততটুকু কাজ করবে।
৯৭
শিক্ষা-দীক্ষা, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা, সামরিক-যুদ্ধ, সবকিছুতেই আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়। কিন্তু, বিশ্বকাপ ক্রিকেট ও ফুটবলে আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হতে পারে না কেন?
৯৮
একজন জ্ঞানী বা একজন নেতার কাজ হলো, তিনি চলমান সমস্যাগুলো উপলব্ধি করার জন্যে মানুষের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করেন। আর, সেই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তির জন্যে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করেন।
আমাদের বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিকদের এক অংশ কেবল মানুষের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করেন, ফলে গণ-মানুষের সমস্যাগুলো তাঁরা বুঝতে পারেন। কিন্তু আল্লাহর সাথে সম্পর্ক না থাকার কারণে সঠিক সমাধান করতে পারছেন না।
অন্যদিকে, আরেক পক্ষ কেবল আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রাখার কারণে তাঁদের কাছে সমাধান আছে। কিন্তু গণ-মানুষের সাথে সম্পর্ক না থাকার কারণে, মানুষের সমস্যাই তাঁরা চিহ্নিত করতে পারছেন না।
৯৯
যাদের কাছে আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই, তাঁদের সাথে আমরা কিভাবে আচরণ করি, তা দিয়েই আমাদের চরিত্র বোঝা যায়।
১০০
জীবন কোনো গণিতের সূত্র নয়। সবার জীবনে দুইয়ে দুইয়ে যোগ করলে চার হয় না। কারো হয় তিন, কারো হয় পাঁচ।