|

‘নিষ্ক্রিয় মুসলিম’ ও ‘সক্রিয় মুসলিম’-এর প্রকারভেদ

মুসলিম প্রথমত দুই প্রকার। নিষ্ক্রিয় মুসলিম ও সক্রিয় মুসলিম।

যারা নিজেকে মুসলিম বলেন, কিন্তু ইসলামের জন্যে নিজের সময়, অর্থ-সম্পদ, মেধা-চিন্তা, যোগ্যতা ও জীবন ব্যয় করে না, তাদেরকে ‘নিষ্ক্রিয় মুসলিম’ বলা হয়। আর যারা ইসলামের জন্যে নিজের সম্পদ ও জীবন ব্যয় করে, তাদেরকে ‘সক্রিয় মুসলিম’ বলা হয়।

সক্রিয় মুসলিমরা কখনো কখনো নিষ্ক্রিয় মুসলিমদেরকে অমুসলিম মনে করেন। অথচ, কোর’আনে আল্লাহ তায়ালা সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় উভয় শ্রেণীর মুসলিমের জন্যে কল্যাণের কথা বলেছেন।

আল্লাহ বলেন –

لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِن۪ينَ غَيْرُ اُو۬لِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ ف۪ي سَب۪يلِ اللّٰهِ بِاَمْوَالِهِمْوَاَنْفُسِهِمْۜ فَضَّلَ اللّٰهُ الْمُجَاهِد۪ينَ بِاَمْوَالِهِمْ وَاَنْفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِد۪ينَ دَرَجَةًۜ وَكُلًّا وَعَدَ اللّٰهُ الْحُسْنٰىۜ وَفَضَّلَ اللّٰهُ الْمُجَاهِد۪ينَ عَلَى الْقَاعِد۪ينَ اَجْرًا عَظ۪يمًاۙ

“মুমিনদের মধ্যে যারা কোনো ওযর ছাড়া ঘরে বসে থাকে, এবং যারা আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে সংগ্রাম করে, তাঁরা উভয়ে সমান নয়। ঘরে বসে থাকা মুমিনদের চেয়ে আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দেয়া মুমিনদের মর্যাদা আল্লাহ বাড়িয়ে দিয়েছেন। (তবে) উভয়ের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ সংগ্রামীদেরকে (সক্রিয় মুমিন) মহান প্রতিদান দিয়ে ঘরে বসে থাকাদের (নিষ্ক্রিয় মুমিন) উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন”। [সূরা ৪/নিসা – ৯৫]

উপরোক্ত আয়াতে যদিও নিষ্ক্রিয় মুসলিম থেকে সক্রিয় মুসলিমদের মর্যাদা বেশি বলা হয়েছে, তবে নিষ্ক্রিয় মুসলিমদেরকে কিছুতেই ইসলাম থেকে খারিজ করে দেননি আল্লাহ। বরং উভয়কেই মুমিন বলেছেন, এবং উভয়ের জন্যেই কল্যাণের ওয়াদা করেছেন।

এবার আসা যাক, সক্রিয় মুসলিমদের প্রকারভেদে।

সক্রিয় মুসলিম প্রধানত দুই প্রকার। ১) ঐতিহ্যবাদী মুসলিম, ২) ইসলামপন্থী বা
সংস্কারপন্থী মুসলিম।

যারা ইসলামের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্যে নিজের মাল ও জান দিতে প্রস্তুত, কিন্তু বর্তমান সময়ে ইসলামকে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিজয়ী করার তৎপরতায় অংশ গ্রহণ করেন না, তাদেরকে ঐতিহ্যবাদী বলা যায়।

যারা ইসলামকে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিজয়ী করার তৎপরতায় অংশ গ্রহণ করেন, তাদেরকে ইসলামপন্থী বলে।

ঐতিহ্যবাদী মুসলিম আবার তিন প্রকার। ১) সালাফীপন্থী বা হাদিসপন্থী, ২) কওমীপন্থী বা ফিকহীপন্থী, ৩) সূফীপন্থী

সালাফীপন্থীরা ঐতিহ্য হিসাবে কেবল ইসলামের প্রথম যুগকেই গ্রহণ করে। কিন্তু কওমীপন্থীরা ঐতিহ্য হিসাবে প্রথম যুগ থেকে শুরু করে লম্বা একটা যুগ পর্যন্ত তাদের ঐতিহ্য হিসাবে গ্রহণ করেন।

ইসলামপন্থীদের সাথে ঐতিহ্যপন্থীদের পার্থক্য হলো, ইসলামপন্থীরা ইসলামকে রাজনৈতিকভাবে বিজয়ী করার জন্যে কখনো কখনো ঐতিহ্যকে সংস্কার করতে চান। কিন্তু ঐতিহ্যবাদীরা মনে করেন, ঐতিহ্যকে কঠিনভাবে সংরক্ষণ করতে হবে, প্রয়োজনে রাজনৈতিকভাবে ইসলাম বিজয়ী হবার ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া যায়।

ইসলামপন্থী আবার দুই প্রকার। ১) শরীয়াপন্থী, ২) রাজনীতিপন্থী

শরীয়াপন্থীরা মনে করেন, রাজনৈতিক সফলতার চেয়ে শরীয়ার বাস্তবায়ন বেশী জরুরী। আর রাজনীতিপন্থীরা মনে করেন, শরীয়া বাস্তবায়নের চেয়ে রাজনৈতিক সফলতা বেশী প্রয়োজন।

10 February 12:21pm 2020

আরো পোস্ট

একটি মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস প্রকাশ করা হবে না। তারকা (*) চিহ্নিত ঘরগুলো পূরণ করা আবশ্যক