শবে মিরাজ ও সূরা নাজমের কিছু আয়াত

শবে মিরাজ ( ليلة المعراج) বলে আমরা যে রাতকে জানি, সেটাকে কোর’আন ও হাদিসে লাইলাতুল ইছরা (ليلة الإسراء) বা ভ্রমণের রাত বলা হয়েছে।

ইছরা (الإسراء) শব্দ দ্বারা বুঝানো হয় যে, রাসূল (স) মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করেছেন। আর মিরাজ (المعراج) শব্দ দ্বারা বুঝানো হয় যে, রাসূল (স) পৃথিবী থেকে সাত আসমানে উঠে আল্লাহর সাথে দেখা করেছেন।

কোর’আনে ইছরা (الإسراء) শব্দটি এসেছে, কিন্তু কোথাও মিরাজ (المعراج) শব্দটি আসেনি। রাসূল (স)-এর মৃত্যুর পরে ২০০ বছর পর্যন্ত কোনো তাফসীর গ্রন্থে, হাদিস গ্রন্থে, অথবা, সিরাতের গ্রন্থে মিরাজ (المعراج) শব্দটি আসেনি।

শবে মিরাজের প্রমাণ হিসাবে কেউ কেউ সূরা নাজমের কয়েকটি আয়াত দেখিয়ে থাকেন।

আয়াতগুলো হলো –

“১১) তিনি যা দেখেছেন, তা তাঁর অন্তর অস্বীকার করেনি। ১২) তিনি যা দেখেছেন, সে বিষয়ে তোমরা তাঁর সাথে বিতর্ক করবে? ১৩) নিশ্চয় তিনি তাকে আরেকবার দেখেছেন। ১৪) সিদরাতুল মুনতাহার নিকট। ১৫) যা জান্নাতুল মাওয়ার নিকটে। ১৬) বৃক্ষটি যা দ্বারা আচ্ছাদিত হবার, তা দ্বারা আচ্ছাদিত থাকার সময়ে। ১৭) তাঁহার দৃষ্টি বিভ্রম হয়নি, এবং লক্ষ্যচ্যুতও হয়নি। ১৮) তিনি তো তাঁহার রবের মহান নিদর্শন দেখেছিলেন। [সূরা ৫৩/নাজম – ১১-১৮]

উপরোক্ত আয়াতগুলো দ্বারা অনেকেই প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, মিরাজের রাতে রাসূল (স) শারীরিকভাবে সাত আসমানে উঠে আল্লাহর সাথে দেখা করেছেন। অথচ, এই আয়াতগুলো শবে মেরাজ সম্পর্কিত নয়।

কারণ, ‘মিরাজ’ বা ইছরা সংগঠিত হয়েছিলো নবুয়তের ১০ম বছর, যখন হজরত খাদিজা (রা) ও আব্দুল মোত্তালিব মারা যান। কিন্তু সূরা নাজম নাযিল হয়েছে নবুয়তের ২য় বছর। অর্থাৎ, ‘মিরাজ’ সংগঠিত হবার ৮ বছর আগেই আল্লাহ এই আয়াতগুলো নাযিল করেছেন। সুতরাং, এ আয়াতগুলোকে কোনো ভাবেই শবে মিরাজের সাথে সম্পর্কিত বলা যায় না।

4 এপ্রিল, 2019, 12:06 PM

আরো পোস্ট