নবীরা এবং নবীর উত্তরসূরিরা কেবল একটি অ্যালার্ম ঘড়ির মত কাজ করেন
হিংসা, অজ্ঞতা ও মূর্খতার কারণে কেউ গালাগালি করলে আমরা তাকে গালাগালি করব কেন?
নবীরা এবং নবীর উত্তরসূরিরা কেবল একটি অ্যালার্ম ঘড়ির মত কাজ করেন। মানুষকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়া এবং সচেতন করাই তাঁদের কাজ। তবে অন্যকে ঘুম থেকে জাগাতে হলে আগে নিজেকে জাগতে হয়। সচেতন ও জ্ঞানী হতে হয়।
যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন –
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمُدَّثِّرُ قُمْ فَأَنذِرْ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ
“হে চাদরাবৃত! উঠ, (মানুষকে) সতর্ক ও সচেতন কর। তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর”। [সূরা ৭১/মুদ্দাছছির – ১, ২, ৩]
আয়াতটি লক্ষ্য করুন, নবী বা নবীর উত্তরসূরিদের কাজ হলো প্রথমে নিজে ঘুম থেকে জাগা বা বৈশ্বিক সচেতনতা অর্জন করা। এরপর, অন্য ঘুমন্ত মানুষদেরকে জাগিয়ে তোলা। অর্থাৎ, অন্য মানুষদেরকে পৃথিবী ও পৃথিবী পরবর্তী জীবন সম্পর্কে সচেতন করা।
একজন মানুষ তখনি কেবল নবীর উত্তরসূরি হতে পারেন, যখন তিনি নিজে জাগ্রত ও সচেতন হন। অর্থাৎ দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে যিনি যত বেশি সচেতন, তিনি তত বেশি নবীর উত্তরসূরি। এবং তিনি তত বেশি অ্যালার্ম দেয়ার কাজ করতে পারেন। গালাগালি করে কাউকে কখনো জ্ঞান দেয়া যায় না, বা সচেতনও করা যায় না।
এখানে মনে রাখা প্রয়োজন, সব অ্যালার্ম ঘড়ি সবসময় সফল হয় না। মানুষ কখনো কখনো ঘুম থেকে উঠে অ্যালার্ম ঘড়িকে মাটিতে বা ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে। কিন্তু সেই মানুষ-ই একটু পরে উঠে যখন অফিসে বা ক্লাসে ঠিক সময়ে যেতে পারেন না, তখন সে নিজে নিজেই আফসোস করতে থাকে।
নবী ও নবীর উত্তরসূরিগণ কোনো ঘুমন্ত মানুষকে জোর করে জাগাতে পারেন না। তাঁরা কেবল অ্যালার্ম বাজাতে পারেন। ততটুকুই তাঁদের কাজ। এর বেশি কিছু করতে যাওয়াকে আল্লাহ তায়ালাও পছন্দ করেন না।
তাই, আল্লাহ বলেন –
لَآ إِكْرَاهَ فِى ٱلدِّينِ ۖ
“ধর্মের ব্যাপারে কোনো জোরজবরদস্তি নেই”। [সূরা ২/বাকারা – ২৫৬]
অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ফজরের সময়ে অন্যকে ঘুম থেকে উঠানোর চেয়ে নিজে আগে ঘুম থেকে উঠা অনেক বেশি কষ্টকর।
‘সে কেনো গালি দিয়েছে?’ –এই প্রশ্নটি করা সহজ। কিন্তু নিজে গালি দেওয়া থেকে বিরত থাকা কঠিন। তাই, সবার আগে নিজে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।