দলহীন ইসলামি রাজনীতি
ইসলামি রাজনীতি করতে হয় ইসলামি দল গঠন না করেই। যখনি ইসলামি রাজনীতি করার জন্যে ইসলামি দল গঠন করা হয়, তখনি দলের বাইরের অন্য মুসলিমদেরকে কম-মুসলিম, মুনাফিক, কাফের ইত্যাদি ট্যাগ দিতে শুরু করে ইসলামি দলগুলো। এবং এতে ফিতনাহ শুরু হয়।
রাসূল (সা)-এর রাজনীতি ও বর্তমানের ইসলামি রাজনীতির মধ্যে পার্থক্য হলো, রাসূল সা রাজনীতি করেছেন অমুসলিমদের বিরুদ্ধে, আর আমরা রাজনীতি করছি আমাদের মুসলিম ভাইদের বিরুদ্ধে। ফলে রাসূলের রাজনীতির কারণে মুসলিমরা একত্রিত হয়েছিলো, মুসলিমদের শক্তি বৃদ্ধি হয়েছিলো, আর আমাদের রাজনীতির ফলে মুসলিমরা দলে দলে বিভক্ত হচ্ছে, এবং মুসলিমদের শক্তি হারাচ্ছে।
অনেকে বলেন, সরকারের জুলুমের বিরুদ্ধে লড়ার জন্যে দল গঠন করা প্রয়োজন, একা লড়া যায় না। এ কথাটা আসলে ঠিক নয়। বাংলাদেশের দিকে তাকালে আমরা দেখি, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যে কয়টি বড় আন্দোলন হয়েছে, কোনটি-ই দলগত আন্দোলন ছিলো না। যেমন, ২০১৩ সালের হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’, এবং স্কুল শিক্ষার্থীদের ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’ বা ‘‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস আন্দোলন’। এ আন্দোলনগুলো ছিলো সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় আন্দোলন। এ আন্দোলনগুলো কোনো একটি দলের নির্দিষ্ট আন্দোলন ছিলো না। ফলে আমরা বুঝতে পারি যে, সরকারের জুলুমের বিরুদ্ধে লড়ার জন্যে দল গঠন করার প্রয়োজন হয় না, বরং দল ছাড়াই বড় ও জনপ্রিয় আন্দোলন করা যায়।
মোদ্দা কথা হলো, ইসলামি রাজনীতি করার জন্যে ইসলামি দল গঠনের প্রয়োজন নেই। ইসলামি রাজনীতি করতে হয় দলহীন ঐক্যের মাধ্যমে।