প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও স্ব-শিক্ষা

অ-আ-ক-খ শিখেছি, হয়েছে প্রায় ২১ বছর। এরপর থেকে অক্ষরগুলো মুখে আওড়ায়ে আসছি বারবার। দীর্ঘ সময় অতিক্রমের ফলে যা কিছু উপলব্ধি হলো, তা বলছি…

শিক্ষা দু’প্রাকার। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও স্ব-শিক্ষা। একটির সাথে অন্যটির পার্থক্য আকাশপাতাল। যদিও কেউ কেউ একই সাথে প্রাতিষ্ঠানিক ও স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত। তবু দু’টি শিক্ষার চরিত্র ভিন্ন ভিন্ন।

এক.
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা – যেখানে বিদ্যালয়গুলো দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ছাত্র ও শিক্ষকের মাঝে। সেখানে শিক্ষকরা সিলেবাস অনুযায়ী ছাত্রদের জ্ঞান দিতে চেষ্টা করেন; ইচ্ছা বা যোগ্যতা অনুযায়ী নয়। আবার, ছাত্ররা সিলেবাস অনুযায়ী জ্ঞান অর্জনের ভান করেন; আগ্রহ বা আনন্দের সাথে নয়।

অন্যদিকে, স্ব-শিক্ষা – যেখানে গুরু ও শিষ্যের মাঝে সম্পর্ক হয় জ্ঞানের ভিত্তিতে; প্রতিষ্ঠানের কারণে নয়। গুরু তাঁর শিষ্য নির্বাচন করেন আগ্রহের বিচারে; আর শিষ্য তাঁর গুরু নির্বাচন করেন যোগ্যতার মানদণ্ডে। গুরু কখনো হয় মা, কখনো বাবা; কখনো পরিবেশ বা পরিবার; কখনো সমাজ কিংবা রাস্তার মুচি।

দুই.
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় অর্জিত হয় কিছু কাগুজে সার্টিফিকেট, যা টাকা বা খাদ্য উপার্জনের জন্যে বেশ সহায়ক। অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশে এ সার্টিফিকেটগুলো খুব সহজলভ্য; টাকার সংখ্যা ও পুরুত্বের সমান্তরালে সার্টিফিকেটের সংখ্যা ও পুরুত্ব বাড়তে থাকে।

কিন্তু, মহামূল্যবান সার্টিফিকেট স্ব- মাধ্যমে অর্জন করা না গেলেও, অর্জিত হয় জ্ঞান। টাকা-পয়সা-অর্থ-সম্পদ এখানে নিরুপায়; ব্যক্তি-ইচ্ছার প্রাধান্যই এখানে বেশি।

তিন.
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষিতরা বিশ্বকে ভোগ করে; অবদান রাখে স্ব-শিক্ষিতরা। প্রথমজন গড়ে নিজের স্বার্থ; দ্বিতীয়জন গড়ে শান্তি – বিলিয়ে নিজের স্বার্থ। প্রথমজনের নাম ‘সফল ব্যবসায়ী’ হলে দ্বিতীয়জনের নাম – হাজী মোহাম্মদ মহসীন। প্রথমজনের নাম ‘জাতীয় অধ্যাপক’ হলে দ্বিতীয়জনের নাম – কাজী নজরুল ইসলাম। একজন পরিচিত পদের কারণে; অন্যজন নিজ-চেষ্টা ও গুণে।

July 16, 2015 at 3:35 PM

আরো পোস্ট