এহইয়াউ উলুমিদ্দীন বইটির জ্ঞান অধ্যায় থেকে ভালো লাগা কয়েকটি বাক্য

ইমাম আবু হামিদ আল গাজালির ‘এহইয়াউ উলুমিদ্দীন’ বইটি পড়েন নি এমন কোনো আলেম খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শুধু আলেমগণ-ই নন; যারা ইসলামের সাধারণ জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী তারাও এ বইটি মনোযোগের সাথে পাঠ করেন।

ইমাম হাসানুল বান্নার কথা আমরা অনেকেই জানি। ইমাম গাজালির এ বই পড়ে তাঁর চিন্তায় এতটাই পরিবর্তন ঘটে যে বিশ্ব বিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েও তিনি সেখানে ভর্তি হতে চাইলেন না। তিনি এত দিন যেটাকে জ্ঞান মনে করতেন, বইটি পড়ার পর তা আর জ্ঞান মনে হচ্ছিল না।

ইমাম গাজালি তাঁর বইয়ে প্রথম অধ্যায়ের নাম দিয়েছেন ‘জ্ঞান’। কোর’আন-হাদিস ছাড়াও জ্ঞান নিয়ে যত জ্ঞানী মানুষ কথা বলেছেন, সব কথাই ইমাম গাজালি তাঁর বইয়ে সংকলন করেছেন। একই সাথে জুড়ে দিয়েছেন তাঁর নিজের মতামত।

এহইয়াউ উলুমিদ্দীন বইটির জ্ঞান অধ্যায় থেকে ভালো লাগা কয়েকটি বাক্য আমার ভাষায় তুলে দিলাম।

* জ্ঞানের অর্জনের পাঁচটি ধাপ। প্রথমে চুপ থাকা, তারপর শ্রবণ করা ও আয়ত্ত করা, এরপর জ্ঞানকে কাজে লাগানো এবং মানুষের মাঝে প্রকাশ করা।

* নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তে উপনীত হবার সবচেয়ে সহজ পথ জ্ঞান।

* জ্ঞান মানুষকে অমর করে তুলতে পারে।

* জ্ঞান নিজেই স্বনির্ভর।

* রাজনৈতিক সফলতার প্রধান নিয়ামক জ্ঞান।

* জ্ঞান-ই কাউকে মানুষ করে তোলে। জ্ঞান ছাড়া কেউ মানুষ হতে পারে না।

* জ্ঞানকে যে তার লাগাম বানায়, মানুষ তাকে নেতা বানায়।

* জ্ঞান অর্জন জীবিকা অর্জনের সহজ হাতিয়ার।

* জ্ঞানী ব্যক্তি তার জ্ঞান নিয়ে চুপ করে বসে থাকা অন্যায়।

* পৃথিবীর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক প্রাণী সে, যার জ্ঞান অর্জন করার কোনো ইচ্ছা নেই।

* জ্ঞানের অপর নাম আলো।

* প্রাসঙ্গিক বিষয়ে কেবল জ্ঞান অর্জন করা উচিত। অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করলে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

* যে কোনো খারাপ কাজে লিপ্ত হবার প্রধান কারণ অজ্ঞতা। খারাপ কাজের সংজ্ঞা, কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার না জানার ফলেই মানুষ খারাপ কাজে লিপ্ত হয়।

* জ্ঞান একাকীত্বে সহচর, ভ্রমণে উত্তম সঙ্গী, একান্তে বাক্যালাপকারী, ধর্মের পথ প্রদর্শক, নিঃস্বতায় সহযোগী, বন্ধুদের সামনে প্রতিনিধিত্বকারী, অপরিচিতদের মধ্যে নৈকট্যকারী, শত্রুর বিরুদ্ধে হাতিয়ার, জান্নাতের পথে আলোকবর্তিকা।

April 3, 2015 at 12:50 AM · 

আরো পোস্ট