চিন্তার মতপার্থক্য থাকলেই সেটাকে ভুল বলা যায় না

কোর’আনের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যেসব তাফসীর গ্রন্থ লেখা হয়েছে, সেসব তাফসীর গ্রন্থে প্রচুর মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু, মত পার্থক্যের কারণে একজন মুফাসসির অন্য মুফাসসিরকে ভুয়া, বেদাতী, ফাসিক, অপব্যাখ্যাকারী এসব বলেননি।

যেমন,

প্রথম মুফাসসিরদের মাঝে অন্যতম মুকাতিল বিন সুলাইমান (মৃত্যু ১৫০হি) সূরা বাকারা ১৪৬ নং আয়াতের অর্থ করেছেন এভাবে, “আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি, তারা কাবাঘরকে সেভাবেই চিনে, যেভাবে তারা নিজেদের সন্তানদেরকে চিনে”।

মুকাতিল বিন সুলাইমানের প্রায় ৫০০ বছর পর কুরতবি (মৃত্যু ৬৭১হি) এসে এই আয়াতের অর্থ করেন এভাবে, “আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি, তারা মুহাম্মদ (স)-কে সেভাবেই চিনে, যেভাবে তারা নিজেদের সন্তানদেরকে চিনে”।

কুরতুবির প্রায় ১০০ বছর পর ইবনে কাসীর (মৃত্যু ৭৭৪হি) এসে একই আয়াতের অর্থ করেছেন এভাবে, “”আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি, তারা কোর’আনকে সেভাবেই চিনে, যেভাবে তারা নিজেদের সন্তানদেরকে চিনে”।

দেখুন, একই আয়াতের অর্থ তিনজন মুফাসসির তিনভাবে করেছেন। এখন এ তিন জনের মধ্যে কে ভুল কে সঠিক?

আমরা সাধারণত কাউকেই ভুল বলি না। কারণ, প্রত্যেকেই নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তাফসীর মানে কোর’আন নয়, কোর’আনের ব্যাখ্যা। তাফসীর পুরাপুরি মানুষের চিন্তা ও মতামতের ভিত্তিতে রচিত হয়।

মাওলানা মওদুদীর তাফহীমুল কোর’আনে এমন অনেক কিছু আছে, যা অন্য মুফাসসিরদের চিন্তার বিপরীত। চিন্তার মতপার্থক্য থাকলেই সেটাকে ভুল বলা যায় না।

_____________
সূত্র

الذين آتيناهم الكتاب يقول أعطيناهم التوراة يعرفونه أي يعرفون «3» البيت الحرام أنه القبلة كما يعرفون أبناءهم وإن فريقا منهم يعني طائفة من هؤلاء الرءوس ليكتمون الحق يعني أمر القبلة وهم يعلمون
[تفسير مقاتل بن سليمان 1/ 148]

يعرفون نبوته وصدق رسالته، والضمير عائد على محمد صلى الله عليه وسلم،
[تفسير القرطبي 2/ 162]

أن علماء أهل الكتاب يعرفون صحة ما جاءهم به الرسول صلى الله عليه وسلم [كما يعرفون أبناءهم]
[تفسير ابن كثير ت سلامة 1/ 462]

29 জানুয়ারি, 2019, 2:23 PM

আরো পোস্ট