সামাজিক কাজ একা-একা করা যায় না, দলবদ্ধ হবার প্রয়োজন হয়

সামাজিক কাজ একা-একা করা যায় না, দলবদ্ধ হবার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ দেশে ভালো কাজের উদ্দেশ্যে দলবদ্ধ হওয়া যায় না। শুরুতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ট্যাগ-সন্ত্রাসীরা। সমাজের ভালো মানুষগুলোকে তারা পৃথক পৃথক ট্যাগ লাগিয়ে দেয়, যাতে ভালো মানুষগুলো দলবদ্ধ হতে না পারেন। সন্ত্রাসীরা কাউকে বলবে- তুমি সালাফী, সে জেহাদি, ওরা জামায়াতি, এরা হেফাজতি, তারা তাবলিগী, – সুতরাং তোমাদের একসাথে কাজ করা উচিত না।

ট্যাগ-সন্ত্রাসীদের পাল্লায় পড়ে সমাজের কিছু ভালো মানুষও মাঝেমধ্যে ভুল করেন। অচেতন মনে তাঁরা ভাবেন- ‘ভালো কাজের স্বার্থে দলবদ্ধতা নয়, বরং দলের স্বার্থে-ই ভালো কাজ করা উচিত’।

ক’মাস আগে গ্রামে একটি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি করতে গিয়ে এ-বিষয়টির উপলব্ধি হয়েছে ব্যাপক। যার কাছেই আমরা যেতাম, তিনিই আমাদের বলতেন, তোমরা কি সালাফী না জেহাদি? কেউ হয়তবা বলতেন, তোমরা তাবলীগী না পীরপন্থী? ছোটখাটো রাজনৈতিকরা বলতেন, তোমরা কোন দলের ভাই? জামায়াতি না হেফাজতি?

ট্যাগ সন্ত্রাসীদের এমন আচরণে আমরা বিস্মিত হতাম, আশ্চর্যান্বিত হতাম; কখনো হতাশ হতেও দেখেছি আমার বন্ধুদের। আল্লাহ তায়ালা এসব ট্যাগ-সন্ত্রাসীদের থেকে আমাদের রক্ষা করুক। এদের কারণে সমাজে কখনো কোনো ভালো কাজ করা সম্ভব হয় না।

যে কোনো ব্যক্তি বা দলের কাজ-ই হোক না কেনো, প্রথমে দেখা প্রয়োজন, কাজটি বৈধ না অবৈধ। যদি বৈধ হয়, সমাজের সকলের সাধ্যানুযায়ী সে-কাজে সহযোগিতা করা উচিত; অবৈধ হলে অনুচিত। যেমনটি আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- “তোমরা ভালো এবং তাকওয়াপূর্ণ কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর; পাপ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে সহযোগিতা করো না” [সূরা আল-মায়েদা : আয়াত-২]।

কিন্তু আমরা চলি কোর‘আনের বিপরীত। কাজটি বৈধ কি অবৈধ –তা না দেখেই প্রশ্ন করি- কাজটি কোন দলের লোকেরা করছে? কোন গোষ্ঠী এখানে সক্রিয়?

‘যদি দেখা যায় কাজটি নিজের দল বা গোষ্ঠীর, তখন সহযোগিতা করি; নচেৎ নয়।’

এ নীতি খুবই বিপদজনক। এর ফলে অনেক ভালো কাজ-ই অঙ্কুরে নষ্ট হয়; আর ট্যাগ-সন্ত্রাসীদের হয় জয়।

May 26, 2015 at 7:53 PM ·

আরো পোস্ট