সাহিত্যের নামে অসংখ্য অখাদ্য-কুখাদ্য আমাদের একাত্তর ও মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে মানুষদের ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে

একাত্তর ও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে বাংলা সাহিত্যে কি পরিমাণ প্রতারণা চলছে, তা বই মেলায় না গেলে বোঝার উপায় নেই।

কেউ হয়তো বস্তি বা সদরঘাটের আশেপাশে ঘুরে কিংবা নির্মলেন্দু গুনের কবিতা থেকে দু’চারটা অশ্লীল-বিশ্রী শব্দ আয়ত্তে এনেছে। এরপর কবি হবার বাসনা জেগেছে। কোনো সমস্যা নেই। নগ্ন শব্দগুলোর আশেপাশে আরো কিছু শব্দ জুড়ে দিয়ে কবিতার মত কিছু একটা লিখে বইয়ের নাম দিয়ে দিলো ‘একাত্তরের কবিতা’। প্রচ্ছদে সেই মুক্তিযুদ্ধ, সেই একাত্তর!!! উল্টিয়ে দেখবেন যতসব ক্ষেত কবিতা দিয়ে ভরা; একাত্তরের নামগন্ধও নেই।

হঠাৎ করেই কারো মনে হয়তো উপন্যাসের নায়িকা উদয় হল। কোনো সমস্যা নেই। নায়িকার দাদার সাথে মুক্তিযুদ্ধের একটি ঘটনা কল্পনা করে দিলেই হবে। উপন্যাসের নাম হবে ‘একাত্তরের সেই মেয়েটি’। অখাদ্য হলেও বাজারে খুব চলবে।

কেউ হয়তো অনর্গল মিথ্যা বলতে পারে; এখন গল্প লিখতে চায়। কোনো সমস্যা নেই। কল্পনা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ‘১৯৭১ এক সাধারণ লোকের কাহিনী’ নামে একটি বই প্রকাশ করে নিলো।

আবার শাহাবাগীদের কেউ কেউ হয়তো ইসলামকে বিদ্বেষ পোষণ করে ফেইসবুকে দু’চারটা স্ট্যাটাস দিয়েছিল; এখন বাপের টাকায় এগুলো প্রকাশ করতে চায়। কোনো সমস্যা নেই। ‘হৃদয়ে একাত্তর’ বা ‘একাত্তরের চেতনায় জেগে উঠার সময়’ নামে প্রকাশকদের কাছে গেলেই তারা হৈ হিল্লা করে উঠবে।

সাহিত্যের নামে এমন অসংখ্য অখাদ্য-কুখাদ্য আমাদের একাত্তর ও মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে মানুষদের ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে। আর কলঙ্কিত করছে আমাদের বইমেলা।

February 3, 2015 at 10:18 PM

আরো পোস্ট