মাদ্রাসা ও আমাদের ঐতিহ্য
‘মাদ্রাসা’ শব্দটি শুনলেই অনেকের মনে হয়, যেখানে দরিদ্র ছেলে-মেয়েরা প্রাইমারী স্কুলের মত কেবল ‘আলিফ-বা-তা’ শিখে, সেটাই মাদ্রাসা।
কিন্তু, আমাদের ‘মাদ্রাসা’র ইতিহাস কখনোই এমন ছিল না।
উদাহরণ স্বরূপ ছবির মাদ্রাসাটি দেখুন। আজকের ‘সভ্য’ অ্যামেরিকা আবিষ্কার হবার ৭৫ বছর আগে এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অর্থাৎ, ১৪১৭ খ্রিস্টাব্দে, বর্তমানের উজবেকিস্তানে সমরকন্দে।
এখানে মূলত তিনটি মাদ্রাসা রয়েছে। তিনটি ভিন্ন সময়ে এগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। সম্পূর্ণ কমপ্লেক্সের নাম রেগিস্তান।
বাঁপাশের মাদ্রাসাটির নাম উলু-বেক মাদ্রাসা। এখানে পড়ানো হতো, কোর’আন, হাদিস, ফিকাহ, দর্শন, যুক্তিবিদ্যা, গণিত, বিজ্ঞান সহ নানা বিষয়। সহজে বুঝার জন্যে, উলু-বেক মাদ্রাসাকে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করা যায়। যদিও উলু-বেক মাদ্রাসাটি ছিলো তখন বিশ্বের সেরা মাদ্রাসা।
ডান পাশের মাদ্রাসাটির নাম সের-দোর মাদ্রাসা। এবং মধ্যখানের মাদ্রাসাটির নাম তিল্লা-কারি মাদ্রাসা। এ দুটি মাদ্রাসার একটিতে ব্যবহারিক বিজ্ঞান পড়ানো হতো, এবং অন্যটিতে পড়ানো হতো ডাক্তারি বিদ্যা। অর্থাৎ, আমাদের বুয়েট ও মেডিক্যালের কথা কল্পনা করতে পারেন।
এই তিনটি মাদ্রাসা ছিল একই স্থানে, পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তিন ধরণের জ্ঞান একে অপরের হাত ধরাধরি করে চলতো।
এমনি ছিলো আমাদের মাদ্রাসাগুলো। কিন্তু আজ ঐসব শিক্ষা পদ্ধতি এবং শিক্ষার বিষয়গুলোকে আমাদের বর্তমান মাদ্রাসাগুলো থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে, মাদ্রাসার কথা শুনলে এখন লোকে ‘হীন’ ধারণা পোষণ করে।