শরিয়া কী? বাংলাদেশ কি শরিয়াসম্মত রাষ্ট্র?

বাংলাদেশ কি একটি শরিয়াসম্মত রাষ্ট্র? নাকি শরিয়ামুক্ত রাষ্ট্র? -এ প্রশ্নটি উত্তর জানার আগে আমাদের জানা প্রয়োজন, শরিয়া কী?

শরিয়া মানে হুদুদ বা শাস্তির প্রয়োগ করা নয়। মানবজীবনের সকল কাজ শরিয়ার সাথে যুক্ত। নামাজ পড়া ও রোজা রাখা যেমন শরিয়ার কাজ, তেমনি জামাই-বউ মিলে সাংসারিক পরামর্শ করাও শরিয়ার অংশ। এ জন্যে কোনো রাষ্ট্র ইচ্ছে করলেও শতভাগ শরিয়ামুক্ত হতে পারে না। কারণ, শরিয়া মানব জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

যে কোনো রাষ্ট্র পরিচালনা করে মানুষ। ফলে, কোনো মানুষ যেমন শতভাগ ভালো বা শতভাগ খারাপ হয় না, তেমনি কোনো রাষ্ট্রও শতভাগ শরিয়াসম্মত বা শতভাগ শরিয়ামুক্ত হতে পারে না।

যার সবকিছুই ভালো, সে মানুষ না, বরং ফেরেশতা। এবং যার সবকিছুই খারাপ, সেও মানুষ না, বরং শয়তান। মানুষের ভালো যেমন থাকে, তেমনি মন্দও থাকে। হতে পারে কিছু মানুষের ভালো কাজ বেশি, এবং কিছু মানুষের খারাপ কাজ বেশি।

একইভাবে, শতভাগ শরিয়াসম্মত রাষ্ট্র ছিলো কেবল রাসূল (স)-এর জামানায়। এরপর আর কখনোই শতভাগ শরিয়াযুক্ত বা শতভাগ শরিয়ামুক্ত কোনো রাষ্ট্র পাওয়া যায়নি। খেলাফতে রাশেদার সময়কে কেউ কেউ শতভাগ শরিয়াসম্মত দাবী করে; কিন্তু সে সময়ের অনেকেই তৎকালীন রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে শতভাগ শরিয়াসম্মত মনে করতেন না। এ জন্যেই হজরত উসমান (রা) ও হজরত আলীকে (রা) শহীদ হতে হয়েছে। কারণ, তখনও কেউ কেউ মনে করতেন, উমার, উসমান ও আলী (রা)-এর পরিচালিত রাষ্ট্রটি শতভাগ শরিয়াসম্মত নয়।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি হয়তো বাংলাদেশের মানুষের মত বেশি খারাপ; কিন্তু সম্পূর্ণ শরিয়ামুক্ত নয়। একইভাবে, পৃথিবীতে সম্পূর্ণ শরিয়াসম্মত কোনো রাষ্ট্র নেই, এবং ভবিষ্যতেও পাওয়া যাবে না; হয়তো বেশি বা কম শরিয়াসম্মত হবে।

5 April 5:36 pm

আরো পোস্ট