নারী দিবসের লেখা – ২৪

কেউ বলতে পারেন, নারীরা উচ্চ চেতনাসম্পূর্ন মানুষ তৈরি করে বলে নারীরাই সেরা। আবার, কেউ বলতে পারেন, পুরুষেরা আধুনিক যন্ত্র বা নিম্ন চেতনার বস্তু নির্মাণ করেন বলে পুরুষেরাই সেরা। কিন্তু ইসলাম এভাবে কাউকে সেরা বা কাউকে অধম হিসাবে মূল্যায়ন করে না।

ইসলাম মানুষকে মূল্যায়ন করে তাঁর সৎকাজের ভিত্তিতে। ফলে, ইসলামে নারী ও পুরুষের মাঝে কোনো বৈষম্য নেই।

যেমন আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

وَمَن يَعْمَلْ مِنَ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ مِن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌۭ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ يَدْخُلُونَ ٱلْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ نَقِيرًۭا

“পুরুষ হোক বা নারী হোক, যেই সৎ কাজ করবে, সেই বিশ্বাসী। এবং তাঁরা সবাই জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাঁদের প্রতি বিন্দু পরিমাণ জুলুম বা বৈষম্য করা হবে না”। [সূরা ৪/নিসা – ১২৪]

এই আয়াতে স্পষ্ট যে, আখিরাতে মানুষকে তার সৎ কাজের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। এবং সেখানে নারী বা পুরুষের মাঝে বিন্দু পরিমাণ কোনো বৈষম্য করা হবে না।

অনেকে হয়তো বলবেন, এই আয়াতে কেবল আখিরাতের কথা বলা হয়েছে, দুনিয়ার কথা বলা হয়নি। সুতরাং, দুনিয়াতে নারী ও পুরুষের মাঝে বৈষম্য রয়েছে।

তাহলে অন্য একটি আয়াত দেখুন। আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

وَٱلْمُؤْمِنُونَ وَٱلْمُؤْمِنَـٰتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَآءُ بَعْضٍۢ ۚ يَأْمُرُونَ بِٱلْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ ٱلْمُنكَرِ وَيُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤْتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَيُطِيعُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓ ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ ٱللَّهُ ۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌۭ

“বিশ্বাসী পুরুষ ও বিশ্বাসী নারী, তাঁরা একে অপরের বন্ধু বা সহযোগী। তাঁরা সৎ কাজের আদেশ দেয়, এবং অসৎ কাজের নিষেধ করে। সালাত কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। যারা এমন করে, তাদেরকেই আল্লাহ তায়ালা দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়”। [সূরা ৯/তাওবা – ৭১]

এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বিশ্বাসী নারী ও পুরুষকে পরস্পরের বন্ধু বা সহযোগী বলেই আয়াতটি শেষ করেননি, তিনি দেখিয়েছেন, ইসলামের সকল কাজে নারী ও পুরুষ উভয়ের সমান অধিকার রয়েছে।

অর্থাৎ, এই আয়াত অনুযায়ী,

সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা যদি পুরুষদের জন্যে ফরজ হয়, তাহলে নারীদের জন্যেও তা ফরজ। কেউ যদি মনে করে, সৎ কাজের আদেশ দেয়ার জন্যে পুরুষদেরকে রাজনীতি করা উচিত, তাহলে নারীদেরও রাজনীতি করা উচিত। সমান তালে।

পুরুষেরা যেমন মসজিদে গিয়ে জামাতে সালাত আদায় করবে, নারীরাও তদ্রূপ মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করবে। পুরুষেরা যেমন যাকাত দেয়ার জন্যে সম্পদ অর্জন করতে পারবে, ঠিক তেমনি নারীরাও সম্পদ অর্জন করতে পারবে।

ইসলামের মৌলিক কোনো কাজেই নারী ও পুরুষের মাঝে বৈষম্য নেই। একজন মুসলিম পুরুষের যতগুলো দায়িত্ব ও অধিকার রয়েছে, একজন মুসলিম নারীরও ঠিক ততগুলো দায়িত্ব ও অধিকার রয়েছে।

2 মে, 2017, 8:00 PM

আরো পোস্ট