| |

‘ফানা বিল্লাহ’ কী?

একজন জিজ্ঞেস করলেন, “ভাই, সূফীরা ‘ফানা ফিল্লাহ’ বলে খুব। এটা কি ভ্রান্ত আকীদা?

একটি বিষয়কে কে কীভাবে বুঝেছে, তার উপর নির্ভর করবে, এটি সঠিক নাকি ভুল।

বাংলাদেশে যেসব সূফী ‘ফানা-ফিল্লাহ’ এর কথা বলেন, তাঁরা ভুলভাবে এটিকে উপস্থাপন করেন। ফলে ‘ফানা-ফিল্লাহ’কে যারা ভ্রান্ত আকীদা বলেন, তাঁরা একদিক থেকে ঠিকই বলেন। কিন্তু ‘ফানা-ফিল্লাহ’ এর আসল বিষয়টা অন্যরকম।

মূলত, তাকদীর বিষয়ক প্রশ্নের সমাধান করার জন্যই ‘ফানা-ফিল্লাহ’ পরিভাষাটির সৃষ্টি হয়েছে।

মানুষকে আল্লাহ তায়ালা একটি ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আবার আল্লাহর নিজেরও একটি ইচ্ছাশক্তি রয়েছে। আমরা যখন কোনো কাজ করি, সেটা কী আল্লাহর ইচ্ছায় হয়? নাকি মানুষের নিজের ইচ্ছায় হয়? -এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অনেক বিতর্ক তৈরি হয়। কেউ মনে করেন, আল্লাহ সর্বশক্তিমান, তাই সব কাজ আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়, মানুষ কেবল রোবটের মতো কাজ করে। আবার কেউ বলেন, মানুষের ইচ্ছাতেই সবকাজ হয়, নতুবা জান্নাত-জাহান্নাম কেন তৈরি করা হলো?

তাকদীর নিয়ে এ বিতর্ক চলতেই থাকে, কখনো শেষ হয় না। সূফীরা এ বিতর্ক থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য ‘ফানা-ফিল্লাহ’ পরিভাষাটি আবিষ্কার করেছেন। সূফীদের মতে, আল্লাহর যেমন ইচ্ছা আছে, তেমনি মানুষেরও ইচ্ছা আছে। সাধারণত মানুষ দ্বৈত ইচ্ছা নিয়ে চলে। কিন্তু মানুষ যখন গভীরভাবে তাওহীদ বা একত্ববাদ বুঝতে পারে, তখন নিজের ইচ্ছাকে শর্তহীনভাবে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করে। নিজের ইচ্ছাকে ত্যাগ করে কেবল আল্লাহর ইচ্ছায় পরিচালিত হবার নাম হলো “ফানা-ফিল্লাহ”।

সূফীদের মতে, নিজের ও আল্লাহর ইচ্ছার মধ্যে একত্ববাদ বা তাওহীদ প্রতিষ্ঠার নাম হলো ‘ফানা-ফিল্লাহ’।

আরো পোস্ট

একটি মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস প্রকাশ করা হবে না। তারকা (*) চিহ্নিত ঘরগুলো পূরণ করা আবশ্যক