নারীরা কি কম জ্ঞানের অধীকারী? – ড মেহমেত গোরমেজ
“পুরুষতান্ত্রিক চিন্তা কখনো কখনো মুসলিমদের উপরেও চাপিয়ে বসেছে। এমনকি এ জন্য তারা রাসূলের নামে মিথ্যা কথাও বলেছে। এবং রাসূল সা-কে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। রাসূল স নারীদেরকে জ্ঞান অর্জনের জন্য গুরুত্ব দেয়া সত্ত্বেও তাঁরা রাসূল স এর নামে জ্বাল হাদীস রচনা করেছে, এই বলে যে –
لا تعلموهن الكتابة
“তোমরা নারীদেরকে লেখা শিক্ষা দিয়ো না।”
যে কোরআনের প্রথম শব্দ “ইকরা” বা “পড়”, সে কিতাবের অনুসারী মুমিনদের অর্ধেককে এ কথা বলা কি সম্ভব যে, “তোমরা তাদেরকে পড়া-লিখা শিক্ষা দিবে না”?
ইমাম বুখারীর শিক্ষকদের মধ্যে ৯ জন নারী রয়েছেন। সে নয়জন নারী থেকে তিনি হাদীস বর্ণনা করেছেন। হাদীস শাস্ত্রে অনেক নারী বর্ণনাকারী রয়েছেন।
সর্বপ্রথম আমি এ কথাটা বলতে চাই। নারীকে কেবল নারী হবার কারণে ছোট করে দেখে, এমন কোনো কথা রাসূলের বাণী হতে পারে না। নারীদের জ্ঞান বা আকল কম হবার কোনো কথা রাসূলের সাথে যুক্ত হতে পারে না। নারীদের দ্বীনে বা ধর্মের ক্ষেত্রে কমতি আছে, এমন কোনো কথাও রাসূলের সাথে যুক্ত হতে পারে না। এ বিষয়ের হাদীসসমূহকে তারা ভুলভাবে বুঝতেছে, এবং ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছে। এ সম্পর্কিত সকল হাদীস সামগ্রিকভাবে বুঝতে হবে।
আমি নিজে হাদীসের শিক্ষক, আমিও এ হাদীসটি জানি।
ما رأيت من ناقصات عقل ودين
এ হাদীসটির উপর ভিত্তি করে সকল মুসলিম নারীকে জ্ঞানের কমতি আছে বা দ্বীনের কমতি আছে ঘোষণা করে যারা, তারা হাদীসটি না বুঝার কারণেই এমন করে।
অবশ্যই আমাদের নারীদেরকে এবং আমাদের মেয়েদেরকে খারাপি থেকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব, কিন্তু একটি খারাপি থেকে রক্ষা করার জন্যে আমরা তাদেরকে ১০টি খারাপির মধ্যে ফেলে দেয়া উচিত না। অজ্ঞতা হলো সবচেয়ে বড় খারাপি। এই অজ্ঞতাকে নারীদের উপর চাপিয়ে দিতে পারি না।”
- মেহমেত গোরমাজ, তুরস্কের ইসলামী ফাউন্ডেশনের সাবেক সভাপতি।