“ম্যারিটাল রেপ” বলে আসলে কিছু আছে?
“ম্যারিটাল রেপ”-কে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করার জন্যে উঠে পড়ে লেগেছেন অনেক নারীবাদী। পৃথিবীর ইতিহাসে এ দাবী কখনো ছিলো না, গত কয়েক বছর হলো, এ দাবী উঠছে।
একপক্ষ “ম্যারিটাল রেপ” বন্ধ করার জন্য আইনকে হাতিয়ার বানাচ্ছেন, আরেক পক্ষ “ম্যারিটাল রেপ” কে জায়েজ করার জন্যে ধর্মকে হাতিয়ার বানাচ্ছেন। ফলে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা জমে উঠেছে, এবং একটি গুরুত্বহীন বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
প্রথমত, “ম্যারিটাল রেপ” নিয়ে পক্ষে বা বিপক্ষে যারা কথা বলছেন, তাদের বেশির ভাগ-ই অবিবাহিত। ফলে তারা না জেনেই এ বিষয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। দ্বিতীয়ত, যেসব নারীর জন্য নারীবাদীরা “ম্যারিটাল রেপ” ধারণার প্রচলন করেছেন, সেসব নারীদের বেশিরভাগ জানেনই না, “ম্যারিটাল রেপ” কী? এবং এ বিষয়ে তাঁরা জানার চেষ্টাও করেন না।
যারা ‘ম্যারিটাল রেপ’-কে আইন করে বন্ধ করতে চান, তাদের মতে, “ম্যারিটাল রেপ হলো স্ত্রীর অসম্মতিতে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করা।”
এই সংজ্ঞাকে মেনে নিয়েই দুটি পক্ষের উদ্ভব হয়েছে। এক পক্ষ বলেন, জোর করে বউয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলে বউ তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। আরেক পক্ষ বলেন, বউয়ের সাথে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করা ইসলাম-সম্মত, সুতরাং মামলা করার তো প্রশ্নই উঠে না।
এই দুই পক্ষই “ম্যারিটাল রেপ” এর ধারণাকে কবুল করে নিয়ে এরপর পক্ষে বা বিপক্ষে তর্ক করেন। কিন্তু আসলে খোদ “ম্যারিটাল রেপ” ধারণাটাই যে সমস্যাজনক; সে বিষয়ের আলোচনা উভয় পক্ষ এড়িয়ে যান।
সাধারণত নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি লজ্জাশীল। নারীরা কোনো কিছুই মুখ ফুটে বলেন না। পুরুষ যদি নারীকে বলে যে, “চলো তোমাকে একটা শাড়ী কিনে দেই”; তাহলে অনেক নারী-ই শুরুতেই বলে, “নাহ, লাগবে না”। কিন্তু একটু জোর করে বাজারে নিয়ে গেলে মনে মনে খুশি হয়। এই যে পুরুষের জোর, এটা হলো ভালোবাসার জোর।
আবার ধরুন, কোনো নারী খুব অসুস্থ। এ সময়ে পুরুষটা যদি বলে যে, “যাও, আমার জন্যে তাড়াতাড়ি খাবার তৈরি করো”। তখন নারীটি যদি বলে যে, “আজকে শরীরটা ভালো লাগছে না, তুমি গিয়ে তৈরি করে খেয়ে আসো।” এ কথা শুনার পরেও পুরুষ যদি নারীটিকে জোর করে খাবার তৈরি করতে পাঠায়, সে ক্ষেত্রে সেটা হবে অন্যায় জোর।
এখানে “জোর খাটানো” বলতে আমরা দুই ধরণের “জোর” দেখলাম। একটি “ভালোবাসার জোর”, আরেকটা হলো “অন্যায় জোর”। বউয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনটা “ভালোবাসার জোর” ছিলো, আর কোনটা “অন্যায় জোর” ছিলো, তা তো কোনো উকিল বা বিচারপতি নির্ধারণ করতে পারবে না। ফলে “ম্যারিটাল রেপ” নামে একটি ধারণার জন্ম দিয়ে সেটাকে আইন-আদালতের বিষয় বানানো যায় না।
এরপর ধরুন; একজন মা তাঁর ছেলেকে বললো, সকালে তাড়াতাড়ি উঠে নাস্তা করে নিতে। ছেলে ঘুমের কারণে উঠলো না। মা তখন জোর করে ছেলেকে উঠিয়ে নাস্তা খাইয়ে দিলো। এখানে মায়ের সাথে ছেলের সম্পর্ক হলো ভালোবাসার সম্পর্ক, এবং জোর করাটা হলো এখানে “ভালোবাসার জোর”। এখনে যে মা তাঁর ছেলেকে জোর করলো, সেজন্যে ছেলেটা কি মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করবে?
মা যেমন তাঁর ছেলেকে জোর করতে পারে, তেমনি কোনো পুরুষ তার ভালোবাসার জন্যই নারীর সাথে জোর করতে পারে। একইভাবে কোনো নারীও তার সঙ্গীর সাথে ভালোবাসার জোর করতে পারে। তাই বলে এই জোর করার জন্যে কি মামলা করতে হবে? কোনো পুরুষের “ভালোবাসার জোরের” কারণে নারীকে মামলা করতে বলা, আর কোনো ছেলেকে তাঁর মায়ের “ভালোবাসার জোরের” কারণে মামলা করতে বলা একই কথা।
“ম্যারিটাল রেপ”-কে আইন করে বন্ধ করলে সমাজ থেকে “ভালোবাসার জোর” করা উঠে যাবে। আর এই “ভালোবাসার জোর” করাটা উঠে গেলে ছেলে মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করবে, ছোটরা বড়দের বিরুদ্ধে মামলা করবে, এক বন্ধু অন্য বন্ধুর বিরুদ্ধে মামলা করবে। এভাবে সামাজিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়বে।
এ কথা সত্য যে, আমাদের সমাজে অনেক কঠিন হৃদয়ের পুরুষ আছে, যারা নারীদের সুখ-দুখ এর প্রতি সবসময় নজর দেয় না। দেখা যায়, একজন নারী অসুস্থ, তা সত্ত্বেও সে নারী বাধ্য হচ্ছে পুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে। এ ক্ষেত্রে সমাধানটা আইন-আদালত বা মামলা করা নয়।
সমাধানটা তাহলে কী?
প্রথমত, অধার্মিক পুরুষরাই নারীদের সাথে বেশি খারাপ ব্যবহার করেন। এ কারণে আমরা দেখি, ধার্মিক নারী-পুরুষদের চেয়ে অধার্মিক নারী-পুরুষের মাঝে সম্পর্ক বিচ্ছেদ বেশি হয়। সুতরাং, যদি স্ত্রীদের অসম্মতিতে শারীরিক সম্পর্কের চর্চা বন্ধ করতে হয়, তাহলে পুরুষদের মাঝে দয়া-মায়া-ভালোবাসা ও আল্লাহ ভীতি তৈরি করতে হবে। আইনের ভীতি দিলে বিবাহ বিচ্ছেদ বাড়বে, এবং নারীরা আগের চেয়ে বেশি অসহায় হয়ে পড়বে।
দ্বিতীয়ত, নারীদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার যে পদ্ধতি ইসলাম দেয়, পুরুষদের তা অনুসরণ করতে হবে।
ইমাম গাজালি স্বামী-স্ত্রীর শারীরিক সম্পর্কের আদব উল্লেখ করতে গিয়ে রাসূল স-এর কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেন –
“রাসূল স বলেন, ‘যখন স্বামী-স্ত্রী সহবাস করতে চায়, তখন যেন গাধার মত উলঙ্গ না হয়। সহবাসের পূর্বে প্রেমালাপ ও চুম্বন করা উচিত’। রাসূলুল্লাহ সা বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন স্ত্রীর উপর চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় পতিত না হয়, বরং স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রথমে দূত বিনিময় হওয়া উচিত। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! দূত বিনিময় কি? তিনি বললেন, চুম্বন ও প্রেমালাপ। অন্য এক হাদীসে আছে – তিনটি বিষয় পুরুষের অক্ষমতার পরিচায়ক। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে আলাপ না করে, প্রীতি সৃষ্টি না করে, কাছে শয়ন না করেই স্ত্রী বা বাঁদির সাথে সহবাস শুরু করা এবং নিজের প্রয়োজন সেরে নেয়া ও স্ত্রীর প্রয়োজন অপূর্ণ রেখে দেয়া। “
(ইমাম গাজালি, এহইয়াউ উলুমুদ্দিন, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা – ২৮৫)
ইমাম গাজালীর উপরোক্ত কথা থেকে স্পষ্ট যে, কোনো মুসলিম যদি স্ত্রীর সাথে মিলিত হবার শিষ্টাচার জানে, তাহলে তাঁর দ্বারা “ভালোবাসার জোর” হতে পারে, কিন্তু কখনোই “অন্যায় জোর” করা সম্ভব হবে না। সুতরাং, “ম্যারিটাল রেপ” বন্ধ করতে হলে আইনের ভয় নয়, বরং ইসলামের শিক্ষা পুরুষদের দিতে হবে।
এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে।
নারীবাদীদের অযৌক্তিক দাবীর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে কিছু ধার্মিক পুরুষ রাসূলের হাদীসের ভুল উপস্থাপন করেন। ‘অন্যায় জোর’কে সমর্থন করে কোনো ধার্মিক পুরুষ নিচের হাদীসটি উল্লেখ করেন –
“আবূ হুরায়রাহ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: কসম সে সত্তার যার হাতে আমার জীবন! কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে যখন বিছানায় আহ্বান করে, কিন্তু সে তা অস্বীকার করে, নিঃসন্দেহে যে পর্যন্ত সে তার স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্টি না হয়, ততক্ষণ আসমানবাসী তার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকে।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমি, ৩৪৩২,)
যদিও এ হাদীসে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করার অনুমতি নেই, তবু অনেকে এটাকে জবরদস্তি করে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্যে ব্যবহার করেন।
অনেকে বলেন, জবরদস্তি করার কথা বলা হয়নি ঠিক, কিন্তু ভয় দেখানো হয়েছে, যাতে স্বামীর অনুগত হয় সর্বাবস্থায়। আসলেই কি তা-ই? নারী সাহাবীরা কি সর্বদা পুরুষ সাহাবীদের শতভাগ অনুগত ছিলেন? সাহাবীরা কি স্ত্রী বা তাঁদের অনুগত নারীদের রাগ বা অনিচ্ছাকে হজম করেননি?
ইমাম গাজালির এহইয়াউ উলুমুদ্দিন থেকে একটি অংশ হুবহু তুলে দিচ্ছে। দেখুন-
“আল্লাহ তায়ালা বলেন – وعاشروهن بالمعروف অর্থাৎ, ‘মহিলাদের সঙ্গে সদাচরণ সহকারে জীবন যাপন কর।’
ওফাতের সময় রাসূলুল্লাহ (সা)-এর ওসিয়ত ছিল তিনটি বিষয়। সেগুলো বলতে বলতেই তাঁর কণ্ঠস্বর স্তিমিত হয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলছিলেন –
الصلاة الصلاة وما ملكت أيمانكم لا تكلفوهم ما لا يطيقون الله الله في النساء فإنهن عوان في أيديكم يعني أسراء أخذتموهن بأمانة الله واستحللتم فروجهن بكلمة الله).
অর্থাৎ, ‘নামায কায়েম কর, নামায কায়েম কর। তোমরা যে সকল গোলাম ও বাঁদীর মালিক, তাদেরকে তাদের সাধ্যাতীত কাজ করতে বলো না। স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। তারা তোমাদের হাতে বন্দী। তোমরা তাদেরকে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকারের মাধ্যমে গ্রহণ করেছ এবং তাদের লজ্জাস্থান আল্লাহর কালেমা উচ্চারণ করে হালাল করেছ।’
এক হাদীসে এরশাদ হয়েছে – যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর অসদাচরণে সবর করবে, আল্লাহ তায়ালা তাঁকে এই পরিমাণ সওয়াব দেবেন, যে পরিমাণ হযরত আইউব (আ)-কে তাঁর বিপদের কারণে দিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে যে স্ত্রী তার স্বামীর বদমেজাজীতে সবর করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে ফেরাউন-পত্নী আছিয়ার সমান সওয়াব দান করবেন। প্রসঙ্গত স্মরণ রাখা দরকার, স্ত্রীর সাথে সদাচরণের অর্থ স্ত্রী পীড়ন না করলে সদাচরণ করা নয়, বরং অর্থ হচ্ছে, স্ত্রীর পীড়নের জওয়াবে সদাচরণ করা। স্ত্রী রাগ করলে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর অনুসরণে তার রাগ সহ্য করা। রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বিবিগণও তাঁর সামনে রাগ করতেন এবং তাঁদের কেউ কেউ সারাদিন তাঁর সাথে কথা বলতেন না। তিনি এসব বিষয় নীরবে সহ্য করতেন এবং তাঁদের সাথে কঠোর ব্যবহার করতেন না। হজরত ওমর (রা)-এর পত্নী একবার তাঁর কথার জওয়াব দিচ্ছিলেন। পত্নী বললেন, ‘রাসূলুল্লাহর (সা)-এর বিবিগণও তাঁর কথার জওয়াব দেন। অথচ রাসূলুল্লাহ (সা) তোমার চেয়ে অনেক শ্রেষ্ঠ। হজরত ওমর বললেন, হাফসা জওয়াব দিয়ে থাকলে সে খুব খারাপ করেছে। তারপর তিনি কন্যা হাফসাকে সম্বোধন করে বললেন, ‘হে হাফসা, সিদ্দীকের কন্যা হবার লোভ করো না। সে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর আদরিনী। তুমি কখনও রাসূলুল্লাহ (সা)-এর কথার জবাব দেবে না।
বর্ণিত আছে, পবিত্র বিবিগণের একজন রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বুকে হাত দেখে তাঁকে ধাক্কা দেন। এ জন্যে তাঁর মা তাঁকে শাসালে রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁকে বললেন, ‘ছাড়, তাঁকে কিছু বলো না। এই পত্নীরা তো এর চেয়ে বড় কাণ্ডও করে। একবার রাসূলে করীম (সা) ও হযরত আয়েশা (রা)-এর মধ্যে কিছু কথা কাটাকাটি হলে তাঁরা উভয়েই হযরত আবূ বকরের কাছে বিচারপ্রার্থী হন। রাসূলুল্লাহ (সা) হযরত আয়েশাকে বললেন, ‘তুমি আগে বলবে, না আমি বলব।’ হযরত আয়েশা আরজ করলেন, ‘আপনি বলুন, কিন্তু সত্য সত্য বলবেন।’ একথা শুনে হযরত আবু বকর (রা) কন্যা আয়েশাকে সজোরে একটা চপেটাঘাত করে বললেন, ‘তুই কি বলছিস, হজরত কি সত্য ছাড়া মিথ্যা বলতে পারেন।’ হজরত আয়েশা রাসূলুল্লাহ (সা)-এর আশ্রয় চাইলেন। এবং তাঁর পিছনে গিয়ে লুকালেন। রাসূলে করীম (সা) হজরত আবু বকর (রা)-কে বললেন, ‘আমরা তোমাকে এজন্যে ডাকিনি এবং তুমি এরূপ করবে এটাও আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না।’
একবার কোন এক কথায় রাগান্বিত হয়ে হযরত আয়েশা (রা) বললেন, ‘আপনিই বলেন, আপনি পয়গম্বর।’ রাসূলুল্লাহ (সা) মুচকি হেসে তা সহ্য করে নিলেন। রাসূলে আকরাম (সা) হজরত আয়েশাকে বলতেন, ‘আমি তোমার রাগ ও সন্তুষ্টি বুঝে নিতে পারি।’ আয়েশা আরজ করলেন, ‘আপনি তা কেমন করে বুঝতে পারেন?’ রাসূলুল্লাহ বললেন, ‘যখন তুমি আমার প্রতি সন্তুষ্ট থাক, তখন কসম খেতে গিয়ে বল – মুহাম্মদ (সা)-এর আল্লাহর কসম, আর রাগের অবস্থায় বল – ইব্রাহীম (আ)-এর আল্লাহর কসম। হযরত আয়েশা আরজ করলেন, ‘আপনি ঠিকই বলেছেন। আমি কেবল আপনার নামটিই বর্জন করি।’ “
(ইমাম গাজালি, এহইয়াউ উলুমুদ্দিন, খন্ড-২, পৃষ্ঠা ২৭৩,২৭৪)
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে আমরা জানলাম যে, রাসূল সা-এর স্ত্রীগণও রাগ করতেন, রাসূলুল্লাহ (স) থেকে দূরে থাকতেন। কিন্তু তাই বলে রাসূল (স) কখনো তাদেরকে ফেরেশতাদের অভিশাপের ভয় দেখাননি।
কোনো স্ত্রী রাগ করা কিংবা স্বামী থেকে দূরে থাকাটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। ফেরেশতাদের অভিশাপের কথা বলে নারীর সাথে জোর করে সহবাসের বৈধতা ঐ হাদীসে পাওয়া যায় না।
সর্বশেষ কথা হলো, এক পক্ষ “ম্যারিটাল রেপ” এর কথা বলে যেমন “ভালোবাসার জোর”কে অপরাধ মনে করে, তেমনি আরেকপক্ষ স্ত্রীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও “অন্যায় জোর”কে জায়েজ করে। উভয় পক্ষ পারস্পারিক তর্ক করে “ম্যারিটাল রেপ” এর মত একটি গুরুত্বহীন বিষয়কে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের করনীয় হলো, স্ত্রীদের সাথে শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইসলামী পদ্ধতি অনুসরণ করা। তাহলে আর মুসলিম নারীদের “ম্যারিটাল রেপ” নিয়ে অভিযোগ করার দরকার পড়বে না।