আয়া সোফিয়া নিয়ে কিছু বিতর্কের জবাব
আয়া সোফিয়া নিয়ে অনেকগুলো বিতর্কের উত্তর পাবেন এ ভিডিওটিতে।
অনেকে আয়া সোফিয়ার সাথে বাবরি মসজিদের বা আল-আকসার বা স্পেনের মসজিদগুলোরও তুলনা করেন। তাদের মতে আয়া সোফিয়া যদি মসজিদ হতে পারে, তাহলে বাবরি মসজিদটা মন্দির হতে সমস্যা কি?
প্রথম কথা হলো, আয়া সোফিয়াকে সুলতান ফাতিহ মেহমেত জোর করে নয়, বরং কিনে নিয়েছেন। এটা সুলতানের নিজের ফাউন্ডেশনের সম্পদ। অন্য দিকে বাবরি মসজিদ বা অন্য যে মসজিদগুলো মন্দির বা গির্জা হয়েছে, তা কিনে নেয়া হয়নি।
দ্বিতীয় কথা হলো, সুলতান ফাতিহ মেহমেত অমুসলিমদের ইবাদাতের স্বাধীনতাকে খুব ভালোভাবে রক্ষা করেছেন। সুলতান মেহমেত ইস্তাম্বুল বিজয় করার পর খ্রিষ্টানদের সাথে একটি চুক্তি করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে, ইস্তাম্বুল বিজয়ের আগে যেভাবে খ্রিষ্টানদের ইবাদাত ও সংস্কৃতি পালন করার স্বাধীনতা ছিলো, ইস্তাম্বুল বিজয়ের পরেও ঠিক একইভাবে খ্রিষ্টানদেরকে পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রদান করা হবে। কেউ ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। যারা অমুসলিমদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতো, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হতো। এ ভিডিওতে তার একটি উদাহরণ রয়েছে।
তৃতীয় কথা হলো, এরদোয়ান কোনো গির্জাকে মসজিদ করেননি, তিনি একটি জাদুঘরকে মসজিদ করেছেন। ফলে বাবরি মসজিদের যুক্তি এখানে খাটে না। এ ছাড়া এরদোয়ান তাঁর আয়া সোফিয়া সম্পর্কিত বক্তব্যে স্পষ্ট বলেছেন, “আমাদের সারাদেশে মসজিদের পাশাপাশি হাজার হাজার বছরের ঐতিহাসিক অনেক গির্জা রয়েছে। বর্তমানে ৪৩৫টি গির্জা ও উপাসনালয় রয়েছে, যা আমাদের আশেপাশের অন্য অঞ্চলে দেখা যায় না। এটাই আমাদের সাথে তাদের পার্থক্য।”
এরদোয়ান তাঁর বক্তব্য বলেছেন, আয়া সোফিয়ায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্যে উন্মুক্ত রাখা হবে। অর্থাৎ, আয়া সোফিয়ায় খুব সম্ভবত খ্রিস্টানদের জন্যেও একটা স্থান রাখা হবে। এরদোয়ান বলেন,
“Ayasofya’nın kapıları da yerli ve yabancı, Müslim ve gayrimüslim herkese sonuna kadar açık olacaktır. İnsanlığın ortak mirası olan Ayasofya, yeni statüsüyle herkesi kucaklamaya çok daha samimi, çok daha özgün şekilde devam edecektir”
(আয়া সোফিয়ার দরজা সকল দেশি ও বিদেশী, মুসলিম ও অমুসলিমের জন্যে খোলা থাকবে। আয়া সোফিয়া সকল মানুষের সম্পদ। আয়া সোফিয়ার বর্তমান অবস্থায় এটি সকল মানুষকে আগের চেয়ে বেশি ভালোবাসা নিয়ে আলিঙ্গন করবে। )
আয়াসোফিয়ার ঘটনাটা দিয়ে আতাতুর্কের সেকুলারিজম ও এরদোয়ানের সেকুলারিজমকে সহজে পার্থক্য করা যায়। আতাতুর্কের সেকুলারিজম মানে ধর্ম রাষ্ট্র হতে পৃথক থাকবে, আর এরদোয়ানের সেকুলারিজম মানে, সকল ধর্মের মানুষ রাষ্ট্রে সমান অধিকার পাবে।
আয়া সোফিয়ায় আগে খ্রিস্টান বা মুসলিমরা ইবাদাত করতেন। আতাতুর্ক এসে আয়াসোফিয়ায় ইবাদাতকে নিষিদ্ধ করেন। এটা ছিলো জুলুম। এখন এরদোয়ান এসে আবার ইবাদাতের সুযোগ সৃষ্টি করেন সকলের জন্যে।
যাই হোক, ভিডিওটা দেখুন। অমুসলিমদের অধিকার বিষয়ক অনেক প্রশ্নের উত্তর পাবেন এখানে।