ভারতের পরামর্শে আমার ‘সোনার বাংলা’
ভারত কেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছিল, তা বোঝার জন্য শশাঙ্ক এস্ ব্যানার্জীর লেখা “India, Mujibur Rahman, Bangladesh Liberation & Pakistan” বইটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হতে পারে। এই বইতে লেখক তুলে ধরেছেন যে, ভারতের ভূমিকা শুধুমাত্র মানবিক সহায়তার জন্য ছিল না, বরং এর পেছনে রাজনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থও জড়িত ছিল।
শশাঙ্ক এস্ ব্যানার্জীর মতে, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিকে জাতীয় সংগীত করার সিদ্ধান্ত নেন। এটি ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও গভীর করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়।
শশাঙ্ক এস্ ব্যানার্জী লিখেন –
“আমরা বসার পর, তিনি আমাকে একটি চমক দিলেন। তিনি আমার কানে ফিসফিস করে বললেন যে “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। তিনি এ বিষয়ে আমার মতামত জানতে চাইলেন।
আমি তাকে বললাম যে এটি সত্যিই একটি চমৎকার ধারণা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো একজন মানবতাবাদী কবি, যিনি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতু হিসেবে কাজ করবেন। এই সম্পর্ককে চিরস্থায়ী করার জন্য আর কী বা প্রয়োজন?
ইতিহাসে এর আগে কখনো ঘটেনি যে দুটি জাতির জাতীয় সংগীত একই ব্যক্তি দ্বারা লেখা হয়েছিল।
এটি ছিল মুজিবের আবেগপূর্ণ উচ্ছ্বাসের একটি নিদর্শন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে জানাতে চেয়েছিলেন যে, “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গানটিকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণের সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছিল কেবল আমার আর মুজিবের সিদ্ধান্তে।”