পাকিস্তানি স্কলার ফজলুর রহমানের কিছু পর্যালোচনা

পাকিস্তানের স্কলার ফজলুর রহমান নিজে মর্ডান হলেও অন্য মর্ডানদের বেশ কিছু সমালোচনা করেছেন।

তার মতে, ইমাম গাজালির ‘এহইয়া উলুম আদ-দীন’ বইটার মাধ্যমেই মুসলিমদের মর্ডান হওয়া শুরু হয়েছে। এরপর ইবনে তাইমিয়া এসে সেটাকে আরো শক্তিশালী করেছেন। ইবনে তাইমিয়া তার সময়ের প্রচলিত চিন্তা-ভাবনাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে নতুন এক চিন্তা হাজির করেন। তিনি রাসূল (স)-এর প্র্যাকটিস বা সুন্নাহর চেয়ে হাদিসের টেক্সটকে বেশী গুরুত্ব দেন। ফলে, ইসলাম কেবল মাদ্রাসার মুফতি বা দরগা শরীফের পীরের কাছে বন্দি না থেকে সাধারণ মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ে। এতে একটা সমস্যাও দেখা দিলো। দীর্ঘ দিনের প্রচলিত ইসলামকে বাদ দিয়ে নতুন যে ইসলামের সূচনা তিনি করেছেন, তা সামাজিকভাবে অনেকেই মেনে নিতে পারেননি।

এরপর ফজলুর রহমান পর্যালোচনা করেন জামাল উদ্দিন আফগানী, মোহাম্মদ আবদুহু ও রশিদ রিদাদের মতো স্কলারদের। ফজলুর রহমানের মতে, এসব স্কলারগণ পশ্চিমা চিন্তাকে ভালোভাবে না বুঝেই পশ্চিমা চিন্তার ভালো কাজগুলো নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু, পশ্চিমা চিন্তার ভালো কাজগুলোর সাথে তাদের খারাপ চরিত্রও একসাথে এসে পড়ে, সেটাকে তারা রোধ করতে পারেননি, অথবা, রোধ করার যোগ্যতা রাখেননি।

তারপর ফজলুর রহমান পর্যালোচনা করে ইসলামী রাজনীতির। তিনি বলেন, ইসলামপন্থীদের ভালো দিক হলো, তারা ইসলামের ঘুণে ধরা চিন্তাকে ভেঙে দিতে চান, এবং পশ্চিমা চিন্তার সমালোচনা করতে চান। এটা ভালো দিক। কিন্তু ইসলামপন্থীদের রাজনীতিতে সেকুলার শিক্ষিত লোকজনে ভরপুর থাকার কারণে, তারা ইসলামের ক্লাসিক্যাল টেক্সটগুলো ভালোভাবে জানে না। ইসলামের নিজের মেথডলোজি অনুযায়ী ইসলামী চিন্তার সংস্করণ করতে তারা পারে না, এবং মুসলিমদের সমস্যা সমাধান করতেও পারে না। তারা ইসলামও ভালো বুঝে না, পশ্চিমা চিন্তাও ভালো বুঝে না। তারা মূলত পশ্চিমাদের থেকে সব জ্ঞান নেয় না; ভালোগুলো নেয়ার চেষ্টা করে, এবং খারাপগুলো বাদ দেয়ার চেষ্টা করে। পশ্চিমাদের ভালো জ্ঞানগুলোকে কোরআনের উপর চাপিয়ে দেয়। তারা সারাক্ষণ ‘বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণের’ কথা বলে, কিন্তু ইসলামী জ্ঞান বা পশ্চিমা জ্ঞান কোনোটাতেই তারা দক্ষ না।

11 February at 1:22pm 2020

আরো পোস্ট