“শুভ নববর্ষ বা হ্যাপি নিউ ইয়ার”
এবারও রাত ১২টার দিকে অনেকের ম্যাসেজ পেলাম – শুভ নববর্ষ বা হ্যাপি নিউ ইয়ার। প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বর বা থার্টি ফাস্ট নাইট ১২টার দিকে যখন এমন ম্যাসেজ পাই, তখন আমার মনে অনেকগুলো প্রশ্ন আসে। মানুষ বলে আমরা বিজ্ঞানের যুগে বাস করছি, অথচ, তাদের সকল কার্যকলাপ কেন অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক?
ইসলামী সভ্যতায় বছরের হিসাব করা হয় চাঁদের ভিত্তিতে, কিন্তু, গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে বছরের হিসাব করা হয় সূর্যের ভিত্তিতে। অর্থাৎ, যেটাকে আমরা ভুলভাবে ‘ইংরেজি সাল’ বা ‘ইংরেজি নববর্ষ’ বলি, সে হিসেবটা করা হয় সূর্যের ভিত্তিতে।
যেহেতু সূর্যের ভিত্তিতে তথাকথিত ইংরেজি সাল শুরু হয়, তাই সূর্যের অস্ত বা উদয়ের মাধ্যমেই ‘ইংরেজি সাল’ শুরু হবার কথা ছিলো। কিন্তু, ইংরেজি সাল শুরু হয় এমন একটি সময়ে, যখন সূর্যের কোনো অস্তিত্ব-ই খুঁজে পাওয়া যায় না। যে সময়ে সূর্যের কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায় না, সে সময়ে সূর্য ভিত্তিক বছরের শুরু বা শেষ হয় কিভাবে?
সুতরাং, রাত ১২ টা বাজে যে তথাকথিত ‘ইংরেজি সালের’ শুরুই হয়, তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যদি সূর্য উদয় বা অস্ত যাবার সময় নতুন বছরের শুরু করা হতো, তাহলে বিষয়টি যৌক্তিক হতো।
ইসলামে বছরের গণনা হয় চাঁদের ভিত্তিতে, তাই বছরের প্রথম মাস ‘মহাররম’ শুরু হয় চাঁদ উদয় হবার মধ্য দিয়ে। চাঁদ দেখা না গেলে মাস বা বছর শুরু হয় না।
ইসলামী সভ্যতায় সূর্য অস্ত যাবার সাথে সাথে পরের দিন শুরু হয়। ফলে, পরের দিন মানুষ কি কি করবে, সে প্রস্তুতি রাত থেকেই নিতে পারে। যেমন, কেউ রোজা রাখার চিন্তা করলে আগের রাতেই তারাবীহর নামাজ পড়ে প্রস্তুতি নেয়। এর ফলে, মানুষ দিনটাকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে। কিন্তু, কারো দিন যদি শুরু হয় রাত ১২ টা বাজে, তাহলে তখন মানুষ ঘুমাবে নাকি পরের দিনের প্রস্তুতি নিবে?
তথাকথিত ‘ইংরেজি নববর্ষ’ উদযাপন করতে হলে রাত ১২টা পর্যন্ত জেগে থাকতে হয়, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক, অপ্রাকৃতিক ও অস্বাস্থ্যকর। এ কারণে যারা আমাকে ম্যাসেজ পাঠিয়েছেন, আমি তাদের উত্তর দিতে পারিনি।
1 জানুয়ারি, 2019, 3:08 PM