কোনো দেশের সাধারণ মানুষ কেন দুর্নীতিবাজ ও খারাপ হয়?
কোনো দেশের সাধারণ মানুষ দুর্নীতিবাজ ও খারাপ হবার কারণ দুটি। ১) দেশের শাসক দুর্নীতিবাজ হওয়া, ২) বুদ্ধিজীবী ও আলেম-ওলামারা দুর্নীতিবাজ হওয়া।
রাসূল (স) বলেন, “আমার উম্মতের মধ্যে দুটি দল রয়েছে। তারা যখন ভালো হয়, তখন জনগণও ভালো হয়। এবং তারা যখন খারাপ হয়, তখন জনগণও খারাপ হয়। এ দুটি দল হলো শাসকশ্রেণী এবং বুদ্ধিজীবী-আলেম-উলামা শ্রেণী।(i)
সালাফী ও সূফীদের কেউ কেউ বলেন, “আপনি-আমি ও দেশের জনগণ ঠিক হয়ে গেলে, দেশের শাসকও শ্রেণীও ঠিক হয়ে যাবে।” আসলে কথাটি ঠিক নয়। বরং, দেশের শাসক ও বুদ্ধিজীবীরা ঠিক হয়ে গেলে সাধারণ মানুষও ঠিক হয়ে যাবে।
ইতিহাসে আমরা দেখি, মুসলিম খলিফা ওলীদ বিন আব্দুল মালিক বেশি বেশি উন্নয়নের কথা বলতেন, বাড়ী-ঘর নির্মাণ করতেন; ফলে তার জনগণও বাড়ি-ঘর নির্মাণে বেশি প্রতিযোগিতা করতো। তার মৃত্যুর পর খলিফা সোলাইমান আসলেন, তিনি খুব বেশি বেশি খেতে পছন্দ করতেন, ফলে তার জনগণও খাওয়া-দাওয়ার প্রতি বেশি মনোযোগী ছিলো। এরপর, খলিফা ওমার বিন আব্দুল আজীজ বেশ দুনিয়া বিমুখ ছিলেন, এবং ধর্মের প্রতি বেশ অনুরাগী ছিলেন; ফলে তার সময়ে জনগণও ধর্ম-কর্মের প্রতি বেশ অনুরাগী ছিলো।(ii)
বর্তমানে বাংলাদেশের দিকে তাকালেও দেখবেন, এ দেশের শাসক বুদ্ধিজীবীরা দিনদিন যতবেশি দুর্নীতিবাজ হচ্ছে, জনগণও ততবেশি দুর্নীতিবাজ হচ্ছে। অর্থাৎ, জনগণ তার শাসক ও বুদ্ধিজীবীদের অনুসরণ করছে।
কোনো দেশে গণতন্ত্র থাকুক বা রাজতন্ত্র থাকুক, রাষ্ট্রের শাসক যদি ভালো হয়, তাহলে রাষ্ট্র এমনিতেই ইসলামী হয়ে যায়। আর, শাসক খারাপ হলে রাষ্ট্র এমনিতেই খারাপ হয়ে যায়। কোনো রাষ্ট্র নামে ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ হলেও শাসক যদি খারাপ হয়, তাহলে লাভ নেই। আবার, কোনো রাষ্ট্র নামে ‘ইসলামী’ না হলেও, যদি শাসক ভালো হয়, তাহলে কোনো ক্ষতি নেই।
______
সূত্র
(i)
صنفان من أمتي إذا صلحوا صلح الناس وإذا فسدوا فسد الناس الأمراء والفقهاء
[إحياء علوم الدين 1/ 6]
(ii) İslam siyaset düşüncesinin kavramsal temelleri. / Özlem Bağdatlı, s – 203
21 October 2019 at 8:19pm