|

জামায়াতে ইসলামী সাথে প্রচলিত রাজনীতির মধ্যে পার্থক্য কী?

প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে জামায়াতে ইসলামী প্রচলিত রাজনীতির বিরোধিতা করতো তিনটি পয়েন্টে।

১) গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র
২) জাতীয়তাবাদ
৩) ধর্মনিরপেক্ষতা

(সূত্র: ইসলাম ও ধর্মহীন গণতন্ত্র)

প্রথম পয়েন্ট প্রসঙ্গে মাওলানা মওদুদি লিখেছেন,

“আমি মুসলমান ভাই-ভগ্নিদেরকে পরিষ্কাররূপে বলে দিতে চাই যে, বর্তমান যুগের ধর্মহীন গণতন্ত্র সম্পূর্ণরূপে আপনাদের দ্বীন ও ইমানের পরিপন্থী জিনিস। উনার সম্মুখে আপনাদের মাথা অবনত করে দেয়ার অর্থ কুরআন হতে মুখ ফিরিয়ে থাকা। আপনারা যদি উহার প্রতিষ্ঠা ও স্থায়ীত্বের কাজে অংশগ্রহণ করেন, তবে উহা হবে আপনাদের রাসূল সা এর সাথে বিশ্বাসঘাতকতার নামান্তর। আর যদি আপনারা উহার পতাকা উড্ডীন করতে দণ্ডায়মান হয়, তবে উহা হবে আপনার আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহীর পতাকা উত্তোলনের শামিল।
(মাওলানা মওদুদী, ইসলাম ও ধর্মহীন গণতন্ত্র, পৃ: ২৬)

মাওলানা মওদুদির এমন কঠোর হুশিয়ারি সত্ত্বেও জামায়াতে ইসলামী এখন গণতন্ত্রের বিরোধিতা করে না। গণতন্ত্রকে আগে তারা ধর্মহীন বা কুফরি মতবাদ বললেও এখন তারা সে চিন্তা থেকে সরে এসেছে। গণতন্ত্রকে হারাম বলা লোক এখন আহলে হাদীসে থাকলেও জামায়াতে ইসলামে নেই।

দ্বিতীয় পয়েন্টের বিরোধিতাও আস্তে আস্তে কমে আসছে। জামায়াত এখন স্বাধীনতা দিবসে র‍্যালি করে, দেশাত্মবোধক গান করে, একুশে ফেব্রুয়ারিতে বক্তৃতা অনুষ্ঠান করে, মুক্তিযুদ্ধের বীর শ্রেষ্ঠদের স্মরণ করে। ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের বিরোধিতা থেকেও জামায়াত আস্তে আস্তে সরে আসছে।

এখন বাকি আছে কেবল ধর্মনিরপেক্ষতা। যেভাবে জামায়াতের বিবর্তন হচ্ছে, খুব সম্ভবত ভবিষ্যতে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ নিয়েও জামায়াত নতুন ধারণা দিবে।

প্রচলিত রাজনীতির সাথে জামায়াতের মতাদর্শিক পার্থক্য প্রায় ৭০ ভাগ-ই কমে এসেছে।

আরো পোস্ট

একটি মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস প্রকাশ করা হবে না। তারকা (*) চিহ্নিত ঘরগুলো পূরণ করা আবশ্যক