আয়া সোফিয়া ও বাবরি মসজিদ কি একই?

মুসলিমরা সারা পৃথিবীর অর্ধেক শাসন করেছে, কখনো কোথায় কোনো মন্দির বা গির্জা ভাঙেনি। আয়াসোফিয়া মুসলিমরা কিনে নিয়ে সেটাকে নানাভাবে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে, কিন্তু বাবরি মসজিদের মত ভেঙ্গে দেয়নি। এখানেই হলো মুসলিমদের ক্ষমতা এবং অমুসলিমদের ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য।

ধর্মীয় স্বাধীনতাকে ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। মসজিদ-মন্দির-গির্জা রক্ষা করার জন্যে কোরআনে আয়াত পর্যন্ত নাযিল করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন –

الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِن دِيَارِهِمْ بِغَيْرِ حَقٍّ إِلَّا أَن يَقُولُوا رَبُّنَا اللَّهُ وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيراً وَلَيَنصُرَنَّ اللَّهُ مَن يَنصُرُهُ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ

“যাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে শুধু এই অপরাধে যে, তারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ। আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে (খ্রিষ্টানদের) গির্জা, এবাদত খানা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত, যেগুলাতে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা আল্লাহর সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী শক্তিধর। “[ সুরা হাজ্জ্ব ২২:৪০ ]

কেবল মুসলিমদের মসজিদ নয়, গির্জা, প্যাগোডা বা মন্দির সব কিছুকেই রক্ষা করা ইসলামের দায়িত্ব। আয়াসোফিয়াকে জাদুঘর থেকে মসজিদে পরিবর্তন করা হয়েছে, কারণ সেখানে মুসলিম বা খ্রিস্টান কারোই ইবাদাত করার স্বাধীনতা ছিলো না। এরদোয়ান এখন সে স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন, এখন মুসলিম বা খ্রিস্টান সবাই আয়াসোফিয়ায় গিয়ে নিজ নিজ ইবাদাত করার সুযোগ রয়েছে।

বাবরি মসজিদ যখন মুসলিমদের কাছে ছিলো, তখনো আয়াসোফিয়ার মতো হিন্দু-মুসলিম উভয়েই বাবরি মসজিদে ইবাদাত করার সুযোগ পেয়েছিলো। প্রায় চার শতাব্দী ধরে মসজিদটিতে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষেরাই ইবাদাত করেছে। কিন্তু হিন্দুরা ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে সেখানে মুসলিমদের মসজিদকে ভেঙ্গে দেওয়া হলো।

আমাদের বাংলাদেশের সেকুলারগন ঠিক এই পার্থক্যটি বুঝতে পারেন না। মুসলিমরা ক্ষমতায় আসলে সব ধর্মের মানুষের ইবাদাত করার স্বাধীনতা রক্ষা করেন, আর হিন্দুরা ক্ষমতায় এসে অন্য ধর্মের স্বাধীনতা হরণ করেন। বাংলাদেশের সেকুলারদের মুনাফিকিটা এটা যে, তারা হিন্দুদের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সেকুলারিজম মনে করেন, সে জন্যে আন্দোলন করেন, কিন্তু মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে নীরব থাকেন।

আরো পোস্ট