পহেলা বৈশাখ প্রসঙ্গে ড আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর
পহেলা বৈশাখ নিয়ে আমি যতগুলো আর্টিকেল পড়েছি ও বক্তব্য শুনেছি, সবচেয়ে মূল্যবান ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা করেছেন উস্তাদ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর। তাঁর মতো বুদ্ধিজীবী বাংলাদেশে এখন নেই বললেই চলে। আসলে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সঙ্কট হলো জ্ঞানী লোকের সঙ্কট।
যাই হোক, পহেলা বৈশাখ নিয়ে উস্তাদ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর খুবই একাডেমিক কিছু কথা বলেছেন এ ভিডিওতে। সেখান থেকে কয়েকটা পয়েন্ট তুলে দিচ্ছি।
১) পহেলা বৈশাখ একটি অবৈজ্ঞানিক, কুসংস্কারপূর্ণ, অযৌক্তিক, অমানবিক ও জমিদারদের খাজনা আদায়ের উৎসব।
২) পশ্চিম বঙ্গের পহেলা বৈশাখের সাথে বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের অনেক পার্থক্য রয়েছে। পশ্চিম বঙ্গের পহেলা বৈশাখ হলো একটি সামাজিক উৎসব, কিন্তু বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখ একটি রাজনৈতিক উৎসব।
৩) বাংলাদেশের সেক্যুলারগণ পহেলা বৈশাখকে মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে মুসলিমদের ধর্মীয় পরিচয় দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে। এবং সমাজ থেকে ইসলামী মূল্যবোধ উঠে যাচ্ছে।
৪) পহেলা বৈশাখ হলো একটি পুঁজিবাদী উৎসব। ইসলামী উৎসবের সাথে পহেলা বৈশাখের পার্থক্য রয়েছে। ইসলামী উৎসবের উদ্দেশ্য হলো ত্যাগ, আর পুঁজিবাদী পহেলা বৈশাখের উদ্দেশ্য হলো ভোগ। ইসলামী উৎসবে ধনীরা গরিবদেরকে খুশি করার আগে নিজেরা উৎসব করেন না। কিন্তু পহেলা বৈশাখে ধনীদের অত্যাচারের কারণে গরিবরা ঘর থেকে বেরও হতে পারেন না।
৫) পহেলা বৈশাখের আনন্দটা মিডিয়ার সৃষ্টি। কারণ, এর ফলে মিডিয়াগুলো পুঁজিবাদীদের থেকে পণ্যের বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করতে পারে।
৬) মঙ্গল শোভাযাত্রার অপর নাম প্রকৃতি পূজা। প্রাচীন, অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক যুগে মানুষ প্রকৃতি পূজা করতো। সেই প্রকৃতি পূজার বর্তমান নাম পহেলা বৈশাখ।
৭) পহেলা বৈশাখের কারণে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রচুর বেড়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর বৈশাখী মেলায় অসংখ্য মেয়ে নির্যাতিত ও ধর্ষিত হয়েছে।
৮) হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি বা উৎসব বলে কোনো কিছু নেই। বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা শুরু হয়েছে গত দশ-বিশ বছর থেকে।
৯) মুসলিম পরিবারগুলোতে পারিবারিক আনন্দের খুবই অভাব। এ কারণেই মুসলিম পরিবারের সন্তানেরা পহেলা বৈশাখে আনন্দ করার জন্যে অধীর অপেক্ষায় থাকে। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ আসার আগেই মুসলিম পরিবারগুলো তাদের সন্তানদেরকে আনন্দ প্রদান করার জন্যে কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ এবং কিছু আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা প্রয়োজন।
১০) পহেলা বৈশাখ পালন করলে কেউ কাফির হয়ে যাবে না, তবে গুনাহগার হবে। মিডিয়া ও সমাজের কারণেই মানুষ না জেনে ও না বুঝে পহেলা বৈশাখ পালন করে, তাই এর জন্যে কাউকে ঘৃণা করা যাবে না। যারা পহেলা বৈশাখ পালন করেন, তাদেরকে গালাগালি বা ঘৃণা না করে, ভালোবেসে ও সুন্দর ভাষায় পহেলা বৈশাখ পালনের ক্ষতিকর দিকগুলো বুঝিয়ে দেয়া প্রয়োজন।
https://www.youtube.com/watch?v=-70uCy2G84E