ইবলিশ শয়তানের কি দোষ?
প্রশ্নটা কিছুটা দার্শনিক। কোর’আন নিয়ে দার্শনিকরা প্রায়ই এ প্রশ্নটি করে থাকেন। তারা বলেন, কোর’আনে আছে –
وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ أَبَىٰ وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ
“আমি যখন আদম কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে বললাম, তারা সবাই সেজদা করল। কিন্তু ইবলিস সেজদা করেনি। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল ।” [সূরা বাকারা, আয়াত – ৩৪]
এখানে দার্শনিকদের প্রশ্ন হলো,
আল্লাহ তায়ালা কেবল ফেরেশতাগণকে সেজদা করতে আদেশ করেছেন। তাই ফেরেশতাগন সবাই সেজদা করেছে। কিন্তু ইবলিস সেজদা না করার কারণ হলো সে ফেরেশতা ছিল না। সে ছিল জিনদের একজন। সুতরাং, ইবলিসের এখানে কি অন্যায় আছে? সে তো আল্লাহর আদেশ অমান্য করেনি।
দার্শনিকদের এ প্রশ্নের উত্তর আছে আল কোর’আনের অন্য একটি আয়াতে।
قَالَ مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ ۖ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْهُ خَلَقْتَنِي مِنْ نَارٍ وَخَلَقْتَهُ مِنْ طِينٍ
“আল্লাহ বললেন, আমি যখন তোমাকে নির্দেশ দিয়েছি, তখন কিসে তোমাকে সেজদা করতে বারণ করল? সে বলল: আমি তার চাইতে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা ।” [সূরা আরাফ, আয়াত – ১২]
এ আয়াত স্পষ্ট যে, আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদেরকে যেমন আদেশ দিয়েছেন, তেমনি ইবলিসকেও আলাদা করে আদেশ দিয়েছেন। এখানে, [أَمَرْتُكَ] বা “তোমাকে” আদেশ দিয়েছি” –এর দ্বারা প্রমাণ হয় যে, আল্লাহ তায়ালা ইবলিসকে আলাদা করে এককভাবে আদেশ দিয়েছিলেন।
ফেরেশতাদেরকে আদেশ দেয়ার পর তাঁরা সবাই আদম (আ)-কে সেজদা করেছেন। কিন্তু যখন ইবলিসকে এককভাবে আল্লাহ তায়ালা আদেশ করলেন, তখন সে আল্লাহর আদেশ অমান্য করে অহংকার প্রদর্শন করল।
সুতরাং, দার্শনিকগণের উপরোক্ত প্রশ্নের জবাব হলো সূরা আরাফের ১২ নং আয়াত।
আল কোর’আনের বৈশিষ্ট্য এটাই । কোর’আনের এক আয়াত অন্য আয়াতকে ব্যাখ্যা করে।