ইস্তিহসান কী? ইমাম আবু হানিফার কাছে ইস্তিহসান কেন এত গুরুত্বপূর্ণ

ইস্তিহসান কী?

ইস্তিহসান শব্দটি আরবি ভাষার “حُسْن” (হুসন) থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ সুন্দর বা উত্তম। ইসলামি ফিকহে ইস্তিহসান বলতে বোঝায়, সাধারণত প্রচলিত আইনগত নিয়ম থেকে ব্যতিক্রম ঘটিয়ে এমন কোনো সমাধান গ্রহণ করা, যা বিশেষ পরিস্থিতিতে আরও উপযুক্ত, সুবিধাজনক এবং ন্যায্য বলে মনে হয়। এটি এক ধরনের আইনি ব্যতিক্রম যা সাধারণত কিয়াস (তুলনামূলক বিচার) বা প্রচলিত নিয়মের ওপর ভিত্তি করে গৃহীত হয়।

ইস্তিহসানের মূল বৈশিষ্ট্য:

  1. উত্তম সমাধান খোঁজা: এমন সমাধান গ্রহণ করা, যা মানুষের কল্যাণে বেশি উপকারী।
  2. ব্যতিক্রম প্রয়োগ: প্রয়োজন বা জরুরতের কারণে একটি সাধারণ বিধান থেকে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া।
  3. ন্যায্যতা ও উপযোগিতা: বিশেষ ক্ষেত্রে ন্যায্যতার ভারসাম্য বজায় রাখা।

ইমাম আবু হানিফার কাছে ইস্তিহসানের গুরুত্ব

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ইস্তিহসানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিকহি পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করেন। এর কারণ:

  1. মানবিক প্রয়োজন মেটানো: বাস্তব জীবনের বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে কিয়াস বা সাধারণ নিয়ম সবসময় উপযুক্ত নাও হতে পারে। ইস্তিহসান ব্যবহার করে তিনি এমন সমাধান দিয়েছেন, যা মানবিক প্রয়োজন এবং কল্যাণকে প্রাধান্য দিয়েছে।
  2. জটিল সমস্যার সমাধান: কিছু সমস্যা ছিল এমন, যেখানে কিয়াসের সিদ্ধান্ত কঠোর বা অযৌক্তিক মনে হতো। ইস্তিহসান প্রয়োগ করে তিনি সেই সমস্যার ন্যায্য ও বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজে বের করতেন।
  3. ফিকহের নমনীয়তা: ইস্তিহসান ইসলামী আইনকে নমনীয় করেছে, যাতে এটি বিভিন্ন সময় ও সমাজের প্রয়োজনে খাপ খাইয়ে চলতে পারে।

আরো পোস্ট

একটি মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস প্রকাশ করা হবে না। তারকা (*) চিহ্নিত ঘরগুলো পূরণ করা আবশ্যক