ফেতনার ভয়ে নারীদেরকে ঘর থেকে বের হতে বাধা দেয়া উচিত নয়, বরং ফেতনার ভয়ে পুরুষরাই নিজেদের চোখ হেফাজত করা উচিত
ফেতনার ভয়ে নারীদেরকে ঘর থেকে বের হতে বাধা দেয়া উচিত নয়, বরং ফেতনার ভয়ে পুরুষরাই নিজেদের চোখ হেফাজত করা উচিত। এ সম্পর্কে কোর’আন ও হাদিস থেকে দুটি দলীল উল্লেখ করছি।
ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন –
খুবই সুন্দরী এক নারী মসজিদে নববীতে নারীদের কাতারে নামাজ পড়তো। কিছু পুরুষ ঐ নারীটিকে দেখা থেকে বাঁচার জন্যে একেবারে সামনের কাতারে চলে যেতো; আবার কিছু পুরুষ আস্তেধীরে হাঁটতো, যাতে পুরুষদের শেষের কাতারে দাঁড়াতে পারে। যখন শেষের কাতারের পুরুষরা রুকুতে যেতেন, তখন তাদের কেউ কেউ পিছনের ঐ সুন্দরী নারীটির দিকে তাকিয়ে থাকতেন। তারা এমনটা করতে থাকলো, যতদিন আল্লাহ এই মর্মে আয়াত নাযিল করেন যে, “নিশ্চয় আমি জানি, তোমাদের মধ্যে কে সামনে চলে যায়, এবং কে পিছনে থেকে যায়” [সূরা ১৫/হিজর – ২৪] [ইবনে হিব্বান – ২/১২৬]
আরেকটি হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বর্ণনা করেন, (তাঁর ভাই) ফাদেল ইবনে আব্বাস (রা) রাসূল (স)-এর পেছনে উষ্ট্রীর ওপর উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় খাছআম গোত্রের এক নারী একটি সমস্যার সমাধান জিজ্ঞাসা করার জন্যে রাসূলের নিকট আসলো। তখন ফাদেল ঐ নারীর দিকে তাকাচ্ছিলেন, আর ঐ নারীও ফাদেলের দিকে তাকাচ্ছিলো। তখন রাসূল (স) ফাদেলের চেহারা অন্য দিকে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর ঐ নারীটি বললো, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার বৃদ্ধ পিতার উপর হজ্জ ফরজ হয়েছে, অথচ তিনি বাহনের ওপর স্থির থাকতে পারেন না। আমি কি তাঁর পক্ষ হতে হজ্জ আদায় করবো? রাসূল (স) বললেন, ‘হ্যাঁ’। [নাসায়ী – ২৬৪২]
উপরোক্ত দুটি হাদিস ও একটি আয়াত থেকে আমরা দুটি অনুসিদ্ধান্তে আসতে পারি।
১) যখন মসজিদে বা রাস্তাঘাটে কোনো নারীকে দেখা যায়, তখন পুরুষদের-ই উচিত নিচের চোখ হেফাজত করা।
২) মসজিদে সুন্দরী নারী আসায় পুরুষদের নামাজের ক্ষতি হওয়ার কারণে আল্লাহ বা তাঁর রাসূল বলেন নি যে, আগামীকাল থেকে কোনো সুন্দরী নারী মসজিদে নামাজ পড়তে পারবে না। বরং আল্লাহ আয়াত নাযিল করে পুরুষদেরকেই সাবধান করেছেন।
৩) রাস্তায় নারী-পুরুষ একে অপরকে দেখাদেখি করার কারণে রাসূল (স) বলেননি যে, “এই নারী তুমি পর্দা করো না কেন?” রাসূল (স) নারীটিকে কিছু না বলে পুরুষের মুখ ফিরিয়ে দিয়েছেন।
৪) অর্থাৎ, কোথাও কোনো নারী-পুরুষ একে অপরকে দেখাদেখি করলে এর জন্যে পুরুষটাকেই দোষারোপ করা হয়। নারীটি কেন মুখে পর্দা করে বের হয় না, তা বলা হতো না।
8 September 2019 at9:17 pm