মতবিরোধ কেন হয়? মুক্তির উপায় কী?
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন মাজহাব, মানহাজ ও মতবিরোধকে খারাপ ভাবে দেখা হয়। অথচ মতের পার্থক্য, মতের ভিন্নতা, ভিন্ন পথ ও ভিন্ন মাজহাব সাহাবীদের যুগ থেকেই ছিলো। কোরআনে আমরা দেখি, নবী মুসা আ ও খাযির এর মতবিরোধ, অথচ উভয়ে ছিলেন সঠিক। সহীহ হাদীস গ্রন্থগুলোতে আমরা সাহাবীদের অসংখ্য মতবিরোধ দেখি, যেখানে দুই পক্ষই সঠিক ছিলো।
সুতরাং, অনেক মত থাকা, অনেক পথ থাকা ও অনেক মাজহাব থাকা কোনো সমস্যা না। একটি গ্রামে যেমন অনেক মসজিদ থাকতে পারে, তেমনি একটি সমাজে অনেক পথ, মত, মাজহাব ও মানহাজ থাকতে পারে।
সমস্যাটা শুরু হয়, যখন কেউ নিজের মত, পথ ও মাজহাবকেই একমাত্র সত্য মনে করেন, এবং অন্য মত, পথ ও মাজহাবকে ভ্রান্ত মনে করেন।
পৃথিবীতে সকল মতবিরোধ হয় দুটি কারণে।
১) আমার বিরোধী যা জানে, তা আমি জানি না।
২) আমি যা জানি, তা আমার বিরোধী জানে না।
মতবিরোধ বিষয়ে মুসা (আ)কে খাযির (আ) একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। খাযির (আ) বলেছেন – “আল্লাহর ইলমের মধ্যে আমি এমন এক ইলম নিয়ে আছি যা তিনি আমাকেই শিক্ষা দিয়েছেন, যা তুমি জান না। আর তুমি এমন ইলমের অধিকারী যা আল্লাহ তোমাকেই শিক্ষা দিয়েছেন, তা আমি জানি না।”*(বুখারী, ইফা, ১২৪)
যখন আমাদের মাঝে মত বিরোধ দেখা দেয়, তখন তর্কে না গিয়ে দুটি কাজ করা উচিত।
প্রথমত প্রশ্ন করা উচিত, আমার বিরোধী যা যা বলে, সে সম্পর্কে কি আমি বিস্তারিত জানি? এ বিষয়ে আমার আর কি কি জানা উচিত? আমার বিরোধীকে আল্লাহ এমন কোন জ্ঞান দান করেছেন, যা আমার জানা নেই? – এ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা এবং বিরোধী পক্ষ যে জ্ঞান জানে, তা জানার চেষ্টা করা।
দ্বিতীয়ত, আমি যা জানি, তা কি আমার বিরোধীর কাছে ভালোভাবে প্রকাশ করতে পেরেছি? আমার কি আরো কিছু ব্যাখ্যা করার আছে? – যদি থাকে, তাহলে আগের চেয়ে আরো ভালোভাবে ও বিস্তৃতভাবে নিজের চিন্তা উপস্থাপন করা।
এ দুটি পন্থা হলো মতবিরোধকে স্বাগত জানানোর ভালো উপায়।