‘কোভিড-১৯’-এর ভালো দিকটা কি?

করোনা ভাইরাস বা (কোভিড-১৯)-এর খারাপ দিক যেমন আছে, তেমনি এর অবশ্যই কিছু ভালো দিক আছে। কারণ, কোরআনে বলা হয়েছে –

إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا

“নিশ্চয় প্রতিটি কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।”(৯৪:৬)

প্রশ্ন হলো, ‘কোভিড-১৯’-এর ভালো দিকটা কী?

কোভিড-১৯ এর পরবর্তী যুগে গরিব দেশগুলোর রাজনীতি ও অর্থনীতি খুব একটা পরিবর্তন না হলেও উন্নত দেশগুলোর রাজনীতি ও অর্থনীতির কাঠামো অনেকটা পাল্টে যাবে। উন্নত দেশগুলো আগে রাজনীতি করতো, তাদের দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্যে। নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্যেই দেশের সবচেয়ে বেশি টাকা খচর করা হতো সেনাবাহিনী ও অস্ত্রের পিছনে।

শিক্ষা, খাদ্য ও স্বাস্থ্যের চেয়ে অস্ত্র বানানোর জন্যে বেশি টাকা খরচ করার পিছনে তাদের একটা যুক্তি ছিলো। যুক্তিটা হলো ভুয়া জঙ্গিদের উত্থান; উন্নত রাষ্ট্র নিজেরাই সেটা করতো। শাসকরা নাগরিকদের বলতো, ‘দেখো, যদি আমরা অস্ত্র না বানাই, তাহলে জঙ্গিরা এসে তোমাদের মেরে ফেলবে। তাই আমাদেরকে প্রচুর অস্ত্র বানাতে হবে।’

‘কোভিড-১৯’-এর পরে এ যুক্তি আর খাটবে না। নাগরিকরা সরকারকে বলবে, ‘কই, তোমার অস্ত্র তো আমাদেরকে বাঁচাতে পারে নাই। সুতরাং, আমরা আর তোমাকে অস্ত্র বানানোর জন্যে টাকা দিবো না।’

উন্নত দেশের নাগরিকরা এখন বুঝতেছেন যে, ‘কেবল উন্নতমানের অস্ত্রই তাদেরকে নিরাপত্তা দিতে পারে না, সুতরাং অস্ত্র বানানোর জন্যে এতদিন যে পরিশ্রম ও টাকা-পয়সা তারা খরচ করেছে, তা আসলে বৃথা’। তাদের এ বুঝটা ধীরে ধীরে আরো প্রকট হবে, যদি কোভিড-১৯ আরো দীর্ঘ সময় চলতে থাকে।

উন্নত বিশ্বের নাগরিকরা যখন তাদের নিরাপত্তার জন্যে অস্ত্রের উপর নির্ভরশীলতা কমাবে, তখন অস্ত্রের উৎপাদন, ক্রয়-বিক্রয়ও কমবে। তখন নতুন নতুন জঙ্গিবাহিনীর উত্থানের কাহিনীও মিডিয়ায় কম আসবে।

করোনা ভাইরাস নতুন বিশ্বের যে হাতছানি দিচ্ছে, সেখানে অনেক রাজনৈতিক অহংকার ও অর্থনৈতিক প্রতারণা মানুষের সামনে স্পষ্ট হয়ে যাবে। ফলে খেটে খাওয়া মানুষের শ্রমের মূল্যায়ন বেড়ে যাবে, ইনশাল্লাহ।

7 April at 7:17pm

আরো পোস্ট