ইসলামী রাজনীতি ও মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ভবিষ্যৎ
ইসলামপন্থী এক নেতা বলেছেন, “একটা কথা নগ্ন-ভাবে বলতেই হয়, জিয়াউর রহমান সাহেব কিন্তু বৈধ সরকার ছিলেন না। জিয়াউর রহমান সাহেব ছিলেন, ড্রেস-পরা রাতের অন্ধকারে মধ্যরাতের অশ্বারোহীদের মত ক্ষমতা দখল করা লোক।”
অনেক ইসলামপন্থী জিয়াউর রহমানকে গ্রহণ করতে পারেন না, অবৈধ বলেন। অথচ তুরস্কের এরদোয়ানের চেয়ে বাংলাদেশের জিয়াউর রহমান বেশি ইসলামপন্থী ছিলেন। এরদোয়ান তুরস্কের সংবিধানে যতটা না পরিবর্তন এনেছেন, তাঁর চেয়ে অনেক বেশি পরিবর্তন এনেছেন জিয়াউর রহমান।
পাকিস্তানে মুসলিমলীগ যেমন ইসলামী রাজনীতি না করে মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতি করে পাকিস্তান নামক একটি সফল রাষ্ট্র গড়তে পেরেছেন, তেমনি বাংলাদেশে জিয়াউর রহমানের রাজনীতি একটি বাস্তব ও সফল রাজনৈতিক ধারা চালু করতে পেরেছেন।
পাকিস্তানের জনক জিন্নাহ এর নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনক শেখ মুজিব দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছিলেন। জিন্নাহকে তিনি খুবই অনুসরণ করতেন। শেখ মুজিব তাঁর বইয়ে কোথায় জিন্নাহ এর বিরোধিতা করেননি। জিন্নাহ এর মৃত্যুকে পাকিস্তান ভাঙ্গার একটি কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন শেখ মুজিব তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে। কারাগারের রোজনামচা বইয়ে শেখ মুজিব বলেছেন, “জিন্নাহকে হিন্দু মুসলমানের মিলনের দূত বলা হতো।”
জিন্নাহর ইতিবাচক রাজনীতির উত্তরসূরি যেমন ছিলেন শেখ মুজিব, তেমনি শেখ মুজিবের ইতিবাচক রাজনীতির উত্তরসূরি ছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান শেখ মুজিবের অনুপ্রেরণায় যুদ্ধ করেছেন, শেখ মুজিবের ইতিবাচক দিকগুলো গ্রহণ করেছিলেন।
জিন্নাহ, শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমান আমাদের এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন সফলভাবে মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতি করেছেন। বর্তমানে তুরস্কের এরদোয়ান, পাকিস্তানের ইমরান খান, মালয়েশিয়ার মাহাথির, তিউনেশিয়ার ঘানুশী, সবাই জিন্নাহ-শেখ মুজিব-জিয়াউর রহমানের ‘মুসলিম জাতীয়তাবাদী’ রাজনীতি-ই করছেন, ইসলামী রাজনীতি নয়। এঁদের ইতিবাচক রাজনীতির পথ ধরেই বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হবে। এর বিপরীতে বামপন্থী ও ইসলামপন্থীরা যে রোমান্টিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে, তা স্বপ্নই থেকে যাবে।